অর্ণব আইচ ও নিরুফা খাতুন: কলকাতা পুরসভার সদর দপ্তরে খোদ মেয়রের ঘরের সামনে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরির অভিযোগে সোমবার আটক করা হয়েছিল এক ‘বাংলাদেশি’ যুবককে। কী কারণে হাই সিকিওরিটি জোনে এভাবে ঘোরাফেরা? উদ্দেশ্য কী? এসব জানতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন পুরসভার নিরাপত্তাকর্মীরা। আর লাগাতার প্রশ্নের মুখে পড়ে অদ্ভুত সমস্ত কথা বলে ফেলেন বছর উনত্রিশের ধৃত যুবক রফিকুল ইসলাম ওরফে পটল। সৌদি আরবের ভিসা সংক্রান্ত সমস্যায় পড়েই নাকি তিনি ওই এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল! তবে তাঁর সঙ্গে থাকা তথ্য-প্রমাণ দেখে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশি নন, রফিকুল নদিয়ার চাপড়ার বাসিন্দা। কলকাতায় কর্মরত তাঁর দুই পরিচিত জানিয়েছেন, রফিকুল ওরফে পটল কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন।
সোমবার রফিকুলকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের পর প্রাথমিকভাবে বেশ কিছু তথ্য উঠে এসেছে। জানা গিয়েছে, চাপড়া থেকে তিনি কলকাতায় এসেছিলেন সৌদি আরবে কাজ করতে যাওয়ার জন্য ভিসার আবেদন জানাতে। সেইমতো বেনিয়াপুকুরের এক এজেন্সির কাছে নিজের পাসপোর্ট ও অন্যান্য নথিপত্র জমা দেন। তাঁর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকাও নেওয়া হয়। কিন্তু কোনও কারণে ওই এজেন্সি টাকা-সহ পাসপোর্ট রফিকুলকে ফিরিয়ে দেয়। ফলে ভিসা মেলেনি। কিন্তু আসল ঘটনা হল, এর আগে ২০১৬ সালে দুবছরের জন্য সৌদি আরবে কাজ করতে গিয়ে তিনবছর কাটিয়ে আসেন রফিকুল। দেশে ফিরে অভিযোগ জানান, তাঁর পাসপোর্ট হারিয়ে গিয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে নতুন পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়। তা নিয়ে আবার সৌদি আরবে কাজে যান রফিকুল। ফেরেন ২০২৩ সালে। তাঁর দুই ভাইও আরব দেশে কর্মরত।
তবে ২০২৩এ ফেরার পর ফের ২০২৫-এ রফিকুল কেন আবার সেখানে যেতে চেয়ে ভিসার তোড়জোড় করছিল অথবা সত্যিই তাঁর উদ্দেশ্য সেটাই কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। রফিকুলের এক আত্মীয়, কাজল গায়েন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কর্মরত। আরেকজন অনিরুদ্ধ গায়েন কলকাতা পুলিশে চাকরি করেন। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা রফিকুলকে চেনেন বলে জানান। একইসঙ্গে জানান, মানসিক ভারসাম্য খানিকটা নষ্ট হয়ে গিয়েছে চাপড়ার যুবকের। সেই কারণেই হয়ত সব কিছু ঠিকমতো বলতে পারছেন না। তবে প্রাথমিক সন্দেহ অনুযায়ী রফিকুলের ‘বাংলাদেশি’ যোগ এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।