• উড়ে বেড়ায় নানা পাখির ঝাঁক, ফল খায় যত খুশি
    এই সময় | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • রাহুল মজুমদার ■ শিলিগুড়ি

    গাছেদের ভিড়ে সবুজে সবুজ উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। মাত্র দশ কিলোমিটার দূরে শিলিগুড়ি কলেজেও গাছেদের সমারোহ। পার্থক্য একটাই, বড় বড় গাছের তুলনায় ফলের গাছ বেশি। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরাট বড় ক্যাম্পাস। গাছ লাগানোর অঢেল জায়গা। কিন্তু সেই তুলনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ভাগের এক ভাগ জায়গা শিলিগুড়ি কলেজে। সেই কলেজে ফলের বাগান তৈরি করে তাক লাগিয়েছেন পড়ুয়া এবং অধ্যাপকেরা। শিলিগুড়ি কলেজের অধ্যক্ষ সুজিত ঘোষের বক্তব্য, ‘এখন তো অন্তত ১৫ প্রজাতির ফলের গাছ রয়েছে। তার মধ্য অনেক গাছে ফলও ফলছে। প্রচুর নিম গাছ লাগানো হয়েছে। দূষণ রোধে সব চাইতে বেশি কার্যকরী। পড়ুয়াদের আব্দারে ফল ও নিমের গাছ লাগানো হয়েছে।’

    কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, আম, জাম, কাঁঠাল, সবেদা, জামরুল, পেয়ারা, চেরি, লিচু, কামরাঙা ও জলপাইয়ের মতো ফলের গাছ গোটা কলেজ জুড়ে লাগানো হয়েছে। টিয়া, চড়ুই, মাঝে মাঝে হর্নবিল এসে তা খেয়ে যায়। শিক্ষক–ছাত্ররা নিজেরাও খান। কিছু ফল আবার চুরি হয়ে যায়। এর মধ্যে একাধিক ফলের গাছ তিন বছর ধরে ফলও দিতে শুরু করেছে। এর বাইরে সায়েন্স বিল্ডিংয়ের সামনে এবং কমার্স কলেজের ভবনের পাশে তৈরি হয়েছে নিমবন। অন্তত ২৫টি নিম গাছ লাগিয়ে এই বন তৈরি করেছেন কর্তৃপক্ষ।

    ন'বছর আগে প্রথম এই উদ্যোগ নেন শিলিগুড়ি কলেজের তৎকালীন এনএসএস (ন্যাশনাল সার্ভিস স্কিম) ইউনিট ৪-এর পড়ুয়া এবং কোঅর্ডিনেটর অধ্যাপিকা বিদ্যাবতী আগরওয়াল। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন খোদ কলেজ অধ্যক্ষ। এক কথায় বলতে গেলে ২০১৬ সাল থেকে শুরু হওয়া প্রচেষ্টার এখন ফল ফলেছে। এনএসএসের কাজের অঙ্গ হিসেবে প্রথমে গাছগুলির পরিচর্যা করা হয়। এখন অবশ্য সব গাছ বড় হয়ে যাওয়ায় কলেজের নিজস্ব মালি দেখাশোনা করেন। নিয়মিত জল দেওয়া থেকে জঞ্জাল সাফাই সবটাই তাঁর একার হাতে।

    অধ্যাপিকা বিদ্যাবতীর বক্তব্য, ‘পড়ুয়ারা বলেছিল, ম্যাডাম স্কুলে ফলের গাছ লাগালে কেমন হয়। বনসৃজন হবে, আবার পাখিদেরও খাবার হবে। সেই থেকেই আমাদের ভাবনা এবং কাজ।’ শিলিগুড়ি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রাক্তন ছাত্র শুভ্রজ্যোতি হালদারের বক্তব্য, ‘গাছ লাগানো আমার নেশা। কলেজে থাকাকালীন ম্যাডাম বলেছিলেন, গাছ লাগাবি। আমরাও ভাবলাম ফলের গাছ লাগালে তো পাখিরাও খেতে পারবে। কলেজে পাখিও বাড়বে। তাই এই উদ্যোগ।’

    শিলিগুড়ি শহরের প্রাণকেন্দ্রে এই কলেজ হওয়ায় সকাল, বিকেল প্রচুর মানুষ সকাল–সন্ধে হাঁটেন। স্থানীয় ছেলেরাও ঢোকে। বহিরাগতরা ঢুকে ফল পাড়তে গিয়ে গাছের ডাল ভেঙে ফেলছে বলে অভিযোগ। অনেকে আবার নিম ডাল বিক্রির জন্য চুপিসারে কেটেও নিয়ে যাচ্ছে। এতেই চিন্তা বেড়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষের।

  • Link to this news (এই সময়)