• প্রশ্নফাঁস-টুকলি অতীত, ‘গুড বয়’ হচ্ছে মালদা
    এই সময় | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • কৌশিক দে ■ মালদা

    মাধ্যমিক পরীক্ষা মানেই মালদা নিয়ে পর্ষদের বাড়তি মাথাব্যথা। গত কয়েক বছরে এই জেলায় প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ সামনে এসেছিল। তাই সোমবার সতর্ক ছিল প্রশাসন। জেলাশাসক একের পর এক স্কুলের পরীক্ষাকেন্দ্র ঘুরে দেখেন। মনিটরিং টিম দিনভর পরীক্ষার উপর কড়া নজর রেখেছিল। পরীক্ষার্থীরা যাতে যানজটে সমস্যায় না পড়েন, তাই পথে নামেন পুরাতন মালদার চেয়ারম্যান। ড্রোন উড়িয়ে নজরদারি চালানো হয়।

    জেলা শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এবারে এবারে মালদায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৭ হাজার ৯০০। এর মধ্যে ছাত্রের সংখ্যা ২০ হাজার ৬৭২। ছাত্রী ২৭ হাজার ২২৮। মোট ১১২টি পরীক্ষাকেন্দ্র রয়েছে। সর্বত্র কড়া নজরদারি রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল যাতে প্রশ্নফাঁস ও টুকলি রোখা যায়। জেলা পুলিশ, প্রশাসন ও পুরসভার নজরদারি ছিল। মহিলা পুলিশের মোটর বাইক বাহিনীর টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। অতীতে যে সব কেন্দ্রে টুকলি হয়েছিল, সেখানে ছিল পুলিশের দল।

    গত বছর মালদায় প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে বেশ হইচই হয়েছিল। প্রশ্ন ফাঁসের চক্র এর পিছনে সক্রিয় ছিল। তাদের নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে পড়েছিল কোচিং সেন্টার থেকে পড়ুয়াদের মধ্যে। পরীক্ষার আগে রীতি মতো হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলে প্রশ্ন পাচার করা হয়েছে। সেই গ্রুপের সদস্য ছিল অনেক পরীক্ষার্থী। কোচিং সেন্টারের সঙ্গে এই চক্রের যোগ পাওয়া গিয়েছিল। মালদা নিয়ে পুলিশ–প্রশাসন এ বার বেশি সতর্ক ছিল। মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিনে বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে নজরদারি চালিয়েছেন খোদ জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া। কথা বলেছেন পরীক্ষা পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকদের সঙ্গে।

    এ দিন ইংরেজবাজার শহরের শান্তিসেন হাইস্কুল ছাড়াও অক্রূরমণি করোনেশন ইনস্টিটিউট, চিন্তামণি চমৎকার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়–সহ বেশ কয়েকটি স্কুলে যান নীতিন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক বাণীব্রত দাস–সহ প্রশাসনের পদস্থ কর্তারা।প্রশ্নফাঁস ও টুকলি সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ এলে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল পুলিশ ও প্রশাসনকে। তবে সোমবার বড়সড় কোনও অভিযোগ ছাড়া পরীক্ষার ব্যবস্থাপনায় উত্তীর্ণ হয়েছে জেলা প্রশাসন।

    পরীক্ষার্থীরা সুষ্ঠু ভাবে নিজেদের পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে পেরেছে কি না, সে ব্যাপারে খোঁজখবর নেন জেলাশাসক। এ জন্য ট্র্যাফিক ব্যবস্থাকে সচল রাখার চেষ্টায় ছিল প্রশাসন। যানজট যাতে না হয়, সে জন্য পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারের উপর শুধু ভরসা না রেখে পথে নেমে পড়েন পুরাতন মালদা পুরসভার চেয়ারম্যান কার্তিক ঘোষ। ড্রোন উড়িয়ে নজরদারি চালান তিনি। তাঁর সঙ্গে পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলার ও পুরকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পুরাতন মালদা পুরসভার মঙ্গলবাড়ি, চৌরঙ্গি মোড়, বুলবুলি মোড় খুবই ব্যস্ত এলাকা, অসংখ্য গাড়ি চলাচল করায় যানজট লেগে থাকে। এ জন্য যাতে পরীক্ষার্থীরা আটকে না পড়েন, তাই ড্রোন ওড়ানো হয়। কার্তিক বলেন, ‘১২ নম্বর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকাগুলি অত্যন্ত জনবহুল। তাই ড্রোন ওড়ানো হয়। কোনও সমস্যা হয়নি পরীক্ষার্থীদের। পরীক্ষার দিনগুলিতে এই নজরদারি থাকবে।’

  • Link to this news (এই সময়)