বনকর্মীর ঘাড়ে কামড় দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কুলতলির রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারকে খাঁচাবন্দি করলেন বনকর্মীরা। বন দপ্তর সূত্রে খবর, মঙ্গলবার ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ বাঘটিকে খাঁচাবন্দি করা হয়। পূর্ণবয়স্ক ওই পুরুষ বাঘটির বয়স আনুমানিক ১০ বছর। তবে বাঘটি কেন জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসেছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
সোমবার বাঘটির আক্রমণে জখম হন এক বনকর্মী। জখম ওই বনকর্মী বর্তমানে কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এরপর বাঘটিকে ধরতে কুলতলির একটি সবজি ক্ষেতে দু’টি খাঁচা পাতেন বনকর্মীরা। টোপ হিসাবে রাখা হয় ছাগল। সেই ছাগলের লোভেই খাঁচাবন্দি হয় বাঘটি। ভোর ৩টে ৩২ মিনিটে ধরা পড়ে বাঘটি।
রবিবার বিকেলে কিশোরী মোহনপুর গ্রামের এক যুবক জেটি ঘাটের কাছে বসেছিলেন। সেই সময় বাঘটিকে দেখতে পান তিনি। সেই কথা জানাজানি হতেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি ব্লকের মৈপীঠ-বৈকুণ্ঠপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর যায় বন দপ্তরের কাছে। বন দপ্তরের রায়দিঘি রেঞ্জের অন্তর্গত নলগোড়া বিট অফিসের কর্মীরা এলাকায় পৌঁছান। মৈপীঠ উপকূল থানাতেও খবর যায়।
সোমবার সকালে নলগোড়া বিট অফিসের বনকর্মীরা বাঘের খোঁজে বের হন। সেই সময়েই সর্ষের খেতের ভিতর থেকে আচমকা বেরিয়ে আসে বাঘটি। মুহূর্তের মধ্যে বনকর্মীদের সামনে এসে পড়ে সে। তারপর সোজা ঝাঁপিয়ে পড়ে বনকর্মী গণেশ শ্যামলের ঘাড়ে। সহকর্মীকে বাঁচাতে দলের বাকি সদস্যেরা লাঠি দিয়ে বাঘটিকে আঘাত করেন। তাতে বনকর্মীকে ছেড়ে দিয়ে জঙ্গলের মধ্যে ঢুকে পড়ে বাঘটি।
এদিকে বাঘের আতঙ্কে রাতের ঘুম উড়ে যায় এলাকাবাসীর। মঙ্গলবার ভোরে বাঘটি খাঁচাবন্দি হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই ভিড় জমে এলাকায়। বন দপ্তরের ডিএফও নিশা গোস্বামী জানান, সাড়ে তিনটে নাগাদ বাঘটিকে ধরা হয়েছে। প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। সোমবারের ঘটনার পর বনকর্মীদের মনোবলে কিছুটা প্রভাব পড়লেও তাঁরা হতাশ হননি। আর সেই কারণেই সকলে মিলে বাঘটিকে খাঁচাবন্দি করতে পেরেছেন।