• দুষ্টুমি করায় টিচারের বকুনি! বাথরুমে গিয়ে ফিনাইল খেল ক্লাস সেভেনের ২ ছাত্রী...
    ২৪ ঘন্টা | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • চিত্তরঞ্জন দাস: প্রচলিত কথা অনুযায়ী, মানুষজন্ম নাকি খুবই ভাগ্যের। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, এই বিষয়টা এখনকার প্রজন্মের কাছে গুরুত্বহীন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে, ছোট ছেলেমেয়েদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে। পান থেকে চুন খসার মত কারণেই তারা এই চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলছে। যা সমাজে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। নিজের জীবন নিজের হাতে কেড়ে নেওয়ার জন্য অনেকটাই মনের জোর থাকা প্রয়োজন। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা যে এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, তার পিছনে কী কারণ হতে পারে? কেন তারা এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে? 

    পারিবারিক কোনও সমস্যা বা অভিভাবকদের শিক্ষায় কি কোনও কমতি ঘটছে? কেন তারা কাউকে কিছু জানানোর আগেই এই চরম সিদ্ধান্ত নিচ্ছে? প্রশ্ন তো থেকেই যাচ্ছে। আর এর সমাধান আমাদের হাতেই।

    প্রসঙ্গত, ফোনে অভিভাবকদের ডাকা হবে এই ভয়ে স্কুলেই চরম সিদ্ধান্ত দুই ছাত্রীর। ফিনাইল খেয়ে নিল দুই ছাত্রী, অসুস্থ দুই ছাত্রীকে ভর্তি করা হয় দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে। শোরগোল পড়ল স্কুলে।

    পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরের নিউ টাউনশিপ থানার এমএমসি মডার্ন উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর পড়ুয়া। বিদ্যালয় সূত্রে জন্য গিয়েছে, কয়েকদিন ধরে ওই দুই  ছাত্রীর নামে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকার কাছে অভিযোগ জমা পড়েছিল। মঙ্গলবার ওই দুই ছাত্রীকে ডেকে অভিভাবকদের মোবাইল নম্বর চেয়েছিলেন ওই শিক্ষিকা। অভিযোগ, শিক্ষিকা অভিভাবকদের ফোন করবে সেই ভয়ে স্কুল ছুটির সময় শৌচালয়ে যায় ওই দুই ছাত্রী। 

    তারপরেই এক ছাত্রী তাঁর সহপাঠীকে ফিনাইল খাইয়ে দেয়। পরে সে নিজেও খানিকটা খেয়ে নেয়। এই ঘটনা জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে যায় গোটা বিদ্যালয়ের জুড়ে। দু'জনকেই তড়িঘড়ি দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতলে ভর্তি করা হয়। এক ছাত্রী কাকার অভিযোগ, 'ওরা তো এখনও বাচ্চা। মাথার মধ্যে অনেক কিছু আসতে পারে। আমরা তাই স্কুল কর্তৃপক্ষকে বললাম ফিনাইলগুলি অন্য জায়গায় রাখার দরকার ছিল। আমরা এই খবর শুনে দু'জনকে ভর্তি করেছি হাসপাতালে।'

    বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তরুণ ভট্টাচার্যের বক্তব্য, 'ওঁরা কয়েকদিন ধরে দুষ্টুমি করছিল। তাই ওদের ডেকে ওদের অভিভাবকদের নম্বর চেয়েছিল ক্লাস টিচার। যদি শিক্ষিকা পরিবারের কাউকে ফোন করে বলে দেয় তাদের দুষ্টুমির কথা, সেই ভয়েই স্কুল ছুটির সময় শৌচালয়ে গিয়েছিল তারা। স্কুল ছুটির সময় শৌচালয় গুলি পরিষ্কার করা হয়। এখানে একটি ফাঁকা ফিনাইলের বোতল ছিল। সেই বোতলে জল ভরে একজন আরেকজনকে খাইয়ে দেয়। কোনও বাচ্চা যদি দুষ্টুমি করে তাহলে তার পরিবারকে যদি না জানানো হয় তাহলে, পরে তাদের পরিবারের লোক কি আমাদের দোষ দেবে। এই কাজ করতে গিয়ে যদি সমস্যায় পড়তে হয় তাহলে তো আর আমাদের স্কুলই চালাতে হবে না। যদিও দু'জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।'

    মহকুমা হাসপাতালের সুপার ডা. ধীমান মণ্ডল বলেন, 'দুই  ছাত্রী ভর্তি হয়েছে। দু'জনই সপ্তম শ্রেণীর পড়ুয়া। ফিনাইল খেয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। চিকিৎসা চলছে। তাদের অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।'

    আপনি কি অবসাদগ্রস্ত? বিষণ্ণ? চরম কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন না। আপনার হাত ধরতে তৈরি অনেকেই। কথা বলুন প্লিজ... 

    iCALL (সোম-শনি, ১০টা থেকে ৮টা) ৯১৫২৯৮৭৮২১

    কলকাতা পুলিস হেল্পলাইন (সকাল ১০টা-রাত ১০টা, ৩৬৫ দিন) ৯০৮৮০৩০৩০৩, ০৩৩-৪০৪৪৭৪৩৭

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)