• কলসেন্টারের আড়ালে সাইবার প্রতারণা, দমদম থেকে গ্রেপ্তার যুবতী সহ মূল চক্রী  
    বর্তমান | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: কলসেন্টারের আড়ালে সাইবার প্রতারণা চক্রের কর্ণধারকে পাকড়াও করল পাঁশকুড়া থানার পুলিস। বাড়িতে বসে অতিরিক্ত আয়ের টোপ, নিঃসঙ্গতা কাটাতে বান্ধবীর খোঁজ, আবার কখনও একঘেয়ে জীবন রঙিন করার প্রলোভন দিয়ে সর্বস্বান্ত করাই ছিল লক্ষ্য। এরকম একটি ঘটনার তদন্তে নেমে দমদমের একটি কলসেন্টার থেকে এক মহিলা ও তার মালিককে পাকড়াও করল পুলিস। কলসেন্টারে কর্মরত আরও ১৫জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো মামলা দায়ের করেছে স্থানীয় থানার পুলিস। সোমবার তমলুক সাইবার ক্রাইম থানার আইসি, সিএমজি(ক্রাইম মনিটরিং গ্রুপ) সেল এবং পাঁশকুড়া থানার যৌথ অভিযানে ওই কলসেন্টারের পর্দা ফাঁস হয়েছে। দু’দিন আগে বৈশাখী রায় নামে চন্দননগরের এক যুবতীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দমদমের ওই কলসেন্টারে হানা দেয় পুলিস। সেখানে কলসেন্টারের কর্ণধার ঘনশ্যাম হালদারকে পাকড়াও করা হয়। মঙ্গলবার ধৃতকে তমলুক সিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক চারদিন পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দেন।


    ২০২৪সালে ৫সেপ্টেম্বর পাঁশকুড়া থানার বাহারপোতার তাপসকুমার হাজরা একটি এফআইআর করেন। বাড়ি থেকে কাজের লোভ দেখিয়ে তাঁর কাছ থেকে দফায় দফায় পাঁচ লক্ষ ৮৬হাজার টাকা আত্মসাত করা হয়। এফআইআরে তাপসবাবু মোট চারটি ফোন নম্বর উল্লেখ করেছিলেন। সেই ফোন নম্বরের সূত্র ধরে পাঁশকুড়া থানার পুলিস ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করে। তাতে সহযোগিতা করে সাইবার ক্রাইম থানা এবং সিএমজি সেল। দু’দিন আগে ফোন নম্বরের সূত্র ধরেই চন্দননগরের বাসিন্দা বৈশাখী রায়কে পুলিস গ্রেপ্তার করে। বৈশাখীকে জেরা করে পুলিস জানতে পারে, দমদমের একটি কলসেন্টার থেকে গোটা অপারেশন চালানো হয়। সেই সেন্টারের মালিক হল ঘনশ্যাম।সোমবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিসের একটি টিম দমদমে পৌঁছে যায়। স্থানীয় থানার পুলিসকে সঙ্গে নিয়ে শুরু হয় অভিযান। একেবারে ঝাঁ চকচকে বহুজাতিক সংস্থার অফিসের মতো ওই কলসেন্টারের অফিস। সেখানে প্রায় ২০জন যুবক-যুবতী কাজ করে। মূলত মানুষ ঠকানোই তাদের পেশা। কখনও চাকরির টোপ, আবার কখনও নিঃসঙ্গতা দূর করতে নারী সঙ্গী সরবরাহ করার টোপ দিয়ে ফোন করা হতো। অধিকাংশ ব্যক্তি প্রত্যাখ্যান করলেও কেউ কেউ প্রলোভনের ফাঁদে পা দিতেন। রেজিস্ট্রেশন করানোর নাম করে স্বল্প পরিমাণ টাকা চাওয়া হয়। ওই কাজ হয়ে যাওয়ার পরই আসল খেলা শুরু করত ওই কলসেন্টারের কর্মীরা। একেবারে সর্বস্বান্ত করে ফেলত।সাইবার প্রতারণা মামলার তদন্তে এর আগেও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিস দমদমে এরকম কলসেন্টারে হানা দিয়েছে। ধৃত ঘনশ্যামকে হেফাজতে নিয়ে ওই ঘটনার আরও তথ্য জোগাড় করবে পুলিস। পাঁশকুড়া থানার আইসি সমর দে বলেন, কলসেন্টার থেকে সাইবার প্রতারণা চলত। আমরা বাহারপোতা এলাকা থেকে একটি অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে প্রথমে এক যুবতীকে গ্রেপ্তার করি। তারপর সোমবার কলসেন্টারের মালিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)