বেনারস থেকে বাংলাদেশে পাচারের আগে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ উদ্ধার
বর্তমান | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, কাটোয়া: তিন বছর পর জেল থেকে জামিন মিলেছিল। আবার মাদক কারবারে পা দেয় মুর্শিদাবাদের দুই পাচারকারী। চারচাকা গাড়িতে বেনারস থেকে নিষিদ্ধ সিরাপ আনছিল। বাংলাদেশে পাচারের আগেই পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম থানার পুলিসের হাতে দুই পাচারকারী ধরা পড়ল। ১২০০ বোতল নিষিদ্ধ সিরাপ উদ্ধার হয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতদের নাম মফিজুল মণ্ডল ও চিন্ময় সরকার। তাদের বাড়ি মুর্শিদাবাদের রানিনগর এলাকায়। কাটোয়ার এসডিপিও কাশীনাথ মিস্ত্রি বলেন, মাদক মামলার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে দেখছি।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত দু’জনই তিন বছর ধরে মাদক মামলায় বহরমপুর জেলে ছিল। সাত-আট মাস আগে তারা জামিন পায়। দশ বছর ধরে তারা পাচারের কাজে যুক্ত রয়েছে। সোমবার রাতে পাঁচুন্দির মোড়ে নাকা চেকিং করছিল কেতুগ্রাম থানার পুলিস। একটি চারচাকা গাড়ি আসতেই পুলিসের সন্দেহ হয়। গাড়িটি পুলিসকে দেখেই ঘুরিয়ে পালানোর চেষ্টা করছিল। তৎক্ষণাৎ পুলিস গাড়িটিকে আটকায়। তারপরই গাড়ির ভিতর দেখে চক্ষু চড়ক গাছ। কাগজের কার্টন ভর্তি নিষিদ্ধ সিরাপ ছিল। এরপরই দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পাশাপাশি গাড়িটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়। ১২০০টি বোতলে ১২০লিটার সিরাপ ছিল। বেনারস থেকে সিরাপ নিয়ে বর্ধমান হয়ে কেতুগ্রামে আসে তারা। তারপর পাঁচুন্দির মোড় হয়ে মুর্শিদাবাদের সালার যাওয়ার কথা। সেখান থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা রানিনগরে পাচার করার উদ্দেশ্য ছিল। কাঁটাতারের ওপারে সিরাপ পাচার করার আগেই আটকে দিল পুলিস।
মুর্শিদাবাদের রানিনগর থানা এলাকার বেশকিছু গ্রাম নিষিদ্ধ সিরাপ পাচারের মূল করিডর হিসেবে পরিচিত। উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর ও বেনারসে তৈরি হয় অতিরিক্ত কোডাইন মিশ্রিত নিষিদ্ধ সিরাপ। এগুলি শুধুমাত্র নেশার জন্য ব্যবহার হয়। বাংলাদেশে এর ব্যাপক চাহিদা, সেখানে এর দামও অনেক বেশি। সেকারণে সীমান্তে সিরাপ পাচারে মরিয়া হয়ে উঠেছে কারবারিরা। বহু যুবক সীমান্তের গ্রামগুলিতে পাচারের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত। কেতুগ্রামের ফুটিসাঁকো এলাকা হয়ে বীরভূমের লাভপুর ও মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানা এলাকায় সহজেই যাওয়া যায়। ফুটিসাঁকো এলাকা দিয়ে কাটোয়া শহর হয়ে ফেরিঘাট ধরে সহজেই নদীয়া জেলায় যাওয়া যায়। অতীতে এই রুট ধরে বহুবার আগ্নেয়াস্ত্র পাচার করতে গিয়ে পুলিসের হাতে ধরা পড়েছে কারবারিরা। অনেক মহিলা ক্যারিয়ারও ধরা পড়েছে। কাটোয়া মহকুমা এলাকাকে বরাবরই করিডর হিসেবে ব্যবহার করে কারবারিরা। -নিজস্ব চিত্র