সংবাদদাতা বেলদা: নারায়ণগড় ব্লকের ভদ্রকালী বাড়গোপাল এলাকায় মুন্ডারি সমাজের উদ্যোগে আয়োজিত হল গরাম পুজো। মঙ্গলবার সকালে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সহকারে এই পুজোর উদ্বোধন হয়। সারাদিন ধরে গরাম থানে পুজো সম্পন্ন হওয়ার পর রাতে গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় দেবীর বিসর্জন হয়। এদিন গরাম পুজো উপলক্ষে গ্রামের মুন্ডারি সমাজের মানুষজনের মধ্যে ছিল উৎসাহ উদ্দীপনা।
প্রথা মেনেই বাংলা সালের মাঘ মাসের যে কোনও শনি কিংবা মঙ্গলবার গরাম দেবীর পূজা করা হয়। গরামদেবী বা গ্রামদেবীর বাহন হাতি ও ঘোড়া। বৈগা ও মুণ্ডা জাতির মানুষ অশুভ শক্তি বিনাশের লক্ষ্যেই গরামদেবী অর্থাৎ বনদেবীর পুজো করে আসছেন বলে জনশ্রুতি। এদিন নারায়ণগড় থানার ভদ্রকালী বাড়গোপাল এলাকায় সকাল থেকেই ছিল সাজোসাজো রব। গ্রামের মহিলারাই প্রথমে প্রথা বা রীতি মেনে শোভাযাত্রা সহকারে ঘট মাথায় নিয়ে পবিত্র জল বয়ে নিয়ে আসে। এরপর বাড়গোপাল গ্রামে একটি গাছের নীচে গরাম থানে পুজো হয় বনদেবী তথা গরাম দেবীর।
গ্রামের বাসিন্দা পুলিন সিং, কালীপদ সিং বলেন মূলত আমাদের মুন্ডারি সমাজের মানুষজন মূর্তি পুজোয় বিশ্বাস করেন না আমরা প্রকৃতির পূজারী। প্রকৃতিকে সুস্থ রাখতে পৃথিবীতে বসবাসকারী বিভিন্ন প্রাণী ও মানুষজনকে ভালো রাখার জন্য আমাদের গরামদেবীর আরাধনা। পৌষ সংক্রান্তিতে আমাদের বছর শেষ হয় নতুন বছর শুরু হয় মাঘ মাস থেকে। আর তাই মাঘ মাসের মঙ্গল কিংবা শনিবার এই পুজো করা হয়। এলাকার বাসিন্দা ভীম সিং, রঞ্জিত সিং বলেন প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখতে প্রতি বছর মাঘ মাসে বছরের শুরুতে আমরা গরামদেবীর আহ্বান করে থাকি। রীতি অনুযায়ী সকালে মহিলাদের দ্বারা ঘটত্তোলনের মধ্য দিয়ে পুজো শুরু হয় ও রাতে বিসর্জন দেওয়া হয়। এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষা পড়ায় কোনও অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারিনি। পরীক্ষা শেষ হলে আমাদের মুন্ডারি সমাজের মানুষজন বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করবে।-নিজস্ব চিত্র