নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: স্বচ্ছ ভারত গড়তে মোদি সরকারের বহু উদ্যোগ প্রচারের আলোয় এসেছে। কখনও ঝাঁটা হাতে প্রধানমন্ত্রীকে রাস্তা পরিচ্ছন্ন করতে দেখা গিয়েছে, কখনও ক্যামেরাকে সাক্ষী রেখে সি বিচে প্লাস্টিক কুড়িয়েছেন তিনি। প্রতি বছর পালন হচ্ছে স্বচ্ছতা পক্ষ। বিশেষ করে স্টেশনের স্বচ্ছতার উপর তাঁর সরকারের প্রচারের অন্ত নেই। এহেন পরিস্থিতিতে স্টেশনের অপরিচ্ছন্নতায় আসানসোলে মুখ পুড়ল রেলের। বেতন বৃদ্ধির দাবিতে সাফাই কর্মীদের আন্দোলন চলল। তারই জেরে আসানসোল স্টেশনে সাফাই অভিযান ব্যাহত। অপরিচ্ছন্ন স্টেশন থেকেই ট্রেন ধরতে হল যাত্রীদের।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই সাফাই কর্মীদের আন্দোলনে চাঞ্চল্য ছড়ায় আসানসোল স্টেশনে। সাফাইকর্মীরা একত্রিত হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। কাজ বন্ধ করে আন্দোলন করায় নোংরা জমতে থাকে প্ল্যাটর্ফম থেকে রেলের ট্র্যাক, সর্বত্র। ডাস্টবিনও পরিষ্কার করা হয়নি। এতে বিপাকে পড়েন যাত্রীরা। কাজ বন্ধ করা নিয়ে আন্দোলনকারীদের দাবি, তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। ডিআরএম এসে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে জানিয়েছিলেন এক একজন সাফাই কর্মীর বেতন ১৫ হাজার টাকা হওয়া উচিত। সেখানে ঠিকাদার দশ হাজার টাকাও বেতন দিচ্ছে না। সংসার চালানো সম্ভব হচ্ছে না। মূল্যবৃদ্ধির আঁচে দগ্ধ হয়ে সাফাই কর্মীরা বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছেন। কাজ হারানোর আশঙ্কা সত্ত্বেও তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। আন্দোলনকারী মলয় রজক বলেন, বহু বছর ধরে এখানে কাজ করছি। সবার বেতন বাড়ছে, আমাদের অবস্থার কোনও উন্নতি নেই। ঠিকাদার ন্যূনতম ১২ হাজার টাকা বেতন ও পিএফ, ইএসআই না দিলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে। সাফাই কর্মী চন্দন দাস বলেন, জিনিসপত্রের দাম আগুন হয়ে গিয়েছে। ১০ হাজার টাকা বেতনে সংসার চালাতে আমরা পারছি না। আধপেটা খেয়ে কাজ করছি। বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছি।
পূর্ব রেলের উল্লেখযোগ্য স্টেশন আসানসোল। সেই স্টেশনেই এই অরাজকতা নিয়ে উচ্চ পদস্থ মহলে সাড়া পড়ে যায়। ঠিকাদার সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয় দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে। আসানসোল ডিভিশনের জনসংযোগ বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, সম্প্রতি আসানসোল স্টেশন সাফাই করার জন্য নতুন টেন্ডার হয়েছে। অন্য একজন টেন্ডার পেয়েছেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রেই দেখা যায় ঠিকাদার পরিবর্তন হলে সাময়িক সমস্যা হয়। ঠিকাদারকে দ্রুত সমস্যা সমাধানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নাহলে তাঁর বিরুদ্ধেই পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সোমবার রেলের বিরুদ্ধে আসানসোল স্টেশনে আন্দোলন করেছিলেন ট্রেন ম্যানেজার বা গার্ডরা। এবার আন্দোলনে নামলেন সাফাইকর্মীরা। কেন্দ্রীয় সংস্থা রেলের অন্দরেই যেভাবে ক্ষোভ আছড়ে পড়ছে, তাতে অনেকেই অশনিসংকেত দেখছেন।-নিজস্ব চিত্র