নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: বিগত পাঁচ বছরে নদীয়া জেলায় তাৎপর্যপূর্ণভাবে বেড়েছে মহিলা ভোটার। প্রতি হাজার পুরুষ পিছু মহিলার সংখ্যা প্রায় সাড়ে ন’শোর কাছাকাছি। সম্প্রতি প্রকাশিত নদীয়া জেলার ভোটার তালিকা থেকে এমনই তথ্য মিলেছে। নদীয়া জেলার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য জেলাগুলোতেও পুরুষ ভোটারের থেকে মহিলা ভোটার বৃদ্ধির হার বেশি। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পই পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকায় এই পরিবর্তনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পের কারণে মহিলাদের মধ্যে ভোট দেওয়ার উৎসাহ বাড়ছে বলে মনে করছেন প্রশাসনের আধিকারিকরা।
নদীয়া জেলা নির্বাচনী দপ্তরের এক আধিকারিকের বলেন, ‘আমাদের জেলার পুরুষ ও মহিলা ভোটারের ভারসাম্য ভালো রয়েছে। বহু নতুন মহিলা ভোটার তালিকায় নাম তুলতে উৎসাহ দেখাচ্ছেন। যা খুবই ভালো।’
জানা গিয়েছে, বর্তমানে ভোটার তালিকার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গে গড় লিঙ্গানুপাত ৯৬৯। এই সংখ্যা রাজ্যের প্রতি এক হাজার জন পুরুষ পিছু মহিলা ভোটারের সংখ্যাকে বোঝায়। সেখানে নদীয়া জেলায় চলতি বছরে লিঙ্গানুপাত ৯৪৮। রাজ্যের গড় থেকে নদীয়া পিছিয়ে থাকলেও, এই পরিসংখ্যান সন্তোষজনক বলেই দাবি প্রশাসনের। কারণ দেখা যাচ্ছে, নদীয়া জেলায় ২০১৯ সালে লিঙ্গানুপাত ছিল ৯৩৮। ২০২০ সালে ৯৪৪, ২০২১ সালে ৯৪৬, তারপর থেকে টানা ২০২৪ সাল পর্যন্ত নদীয়া জেলায় লিঙ্গানুপাত রয়েছে ৯৪৮। বর্তমানে নদীয়া জেলায় মহিলা ভোটারের সংখ্যা ২১ লক্ষ ৪৭ হাজার ৯৩৮ জন। যা মোট ভোটারের ৪৮ শতাংশ। রাজ্যে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার চালু হয়েছিল ২০২০-২১ অর্থবছরে। তারপর থেকেই গ্রামবাংলার মহিলাদের মধ্যে ভোট দেওয়ার উৎসাহ বেড়েছে।
রাজনৈতিক মহলের দাবি, বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে মহিলা ভোটার বৃদ্ধি তৃণমূলের পক্ষে স্বস্তিদায়ক। ভোটার তালিকায় মহিলার সংখ্যা বাড়ায় খুশি সমাজবিজ্ঞানীরা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নদীয়া জেলার বেশ কিছু বিধানসভায় প্রতি এক হাজার জন পুরুষে মহিলা ভোটারের সংখ্যা রাজ্যের গড় লিঙ্গানুপাতের থেকে বেশি। রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম বিধানসভায় ৯৮৪, কৃষ্ণনগর উত্তর ও কল্যাণী বিধানসভায় ৯৮৩, নবদ্বীপ বিধানসভায় ৯৭১। সেই তুলনায় চাপড়া (৯১২), নাকাশিপাড়া (৯২১), কালীগঞ্জ (৯৩৭), পালাশিপাড়া (৯২৪), রানাঘাট উত্তর-পূর্ব (৯১২), এই বিধানসভাগুলোতে লিঙ্গানুপাত তুলনামূলকভাবে কম।
প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, ‘অনেক সময় সরকারি প্রকল্পের সুবিধা নিতে গেলে আবেদনকারীকে পরিচয়পত্র হিসেবে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড দিতে হয়। পরিচয়পত্র হিসেবে ভোটার কার্ড না থাকলে, প্রকল্পের সুবিধা পেতে অনেক সময় সমস্যা হতে পারে।’ ফাইল চিত্র