ডিএমের আশ্বাস, বিশেষ চাহিদাসম্পন্নের পরিবারের পাশে প্রশাসনের আধিকারিকরা
বর্তমান | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ ও সংবাদদাতা মানিকচক: মঙ্গলবার সকাল থেকেই বাড়ির সামনে প্রশাসনিক কর্তাদের গাড়ি দাঁড়িয়ে। কী হয়েছে জানতে সেখানে ভিড় করেন গ্রামবাসীরা। মালদহ জেলার মানিকচক ব্লকের মথুরাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রায়পাড়ায় ১৬ বছরের কিশোর বিশু রায়ের পরিবার তখন যেন আকাশ থেকে পড়েছেন।
সোমবার ইংলিশবাজারে মাধমিক পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে স্বয়ং জেলাশাসকের নজরে পড়ে বিশু। তার কাছে গিয়ে সবরকম প্রশাসনিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়া। যেমন নির্দেশ তেমন কাজ। মানিকচকের বিডিও অনুপ চক্রবর্তী বলেন, জেলাশাসক নির্দেশ দিয়েছিলেন সেইমতো তার বাড়িতে আসা। তার পরিবার আবাসের টাকা পেয়েছে। মা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পান। বিশুও মানবিক ভাতা পায়। রেশন ডিলারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বাড়িতে সময়মতো সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার জন্য। শিক্ষাক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা হলে তার ব্যবস্থাও করা হবে।
প্রশাসনের আধিকারিকের মুখ থেকে একথা শোনার পর নিশ্চিত হয় বিশুর পরিবার। বিশুর বাবা অনিল রায় পেশায় রাজমিস্ত্রি ও মা ছায়া রায় দিনমজুরের কাজ করেন।
প্রশাসনের কর্তারা এদিন কিশোরের বাড়িতে গিয়ে কথা বলেন। এদিন অসহায় পরিবারটিকে বেশকিছু সহযোগিতাও প্রদান করা হয়। পাশাপাশি চিকিৎসার জন্য যে যে সহযোগিতা প্রয়োজন সমস্তটাই প্রশাসনের তরফে করা হবে বলে জানিয়েছেন বিডিও।
এদিন সকালে ওই কিশোরের বাড়িতে পৌঁছন প্রশাসনের কর্তারা। বিডিও’র সঙ্গে মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পিঙ্কি মণ্ডল, মানিকচক গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসক সহ অন্যান্যরা ছিলেন। প্রশাসন জানিয়েছে, বিশুর পায়ের চিকিৎসা করানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মা ছায়া রায় বলেন, স্বামী পরিবারে কোনও খরচ দেয় না। আমি কাজে যাওয়ার পর ছেলে আমায় না বলে বিভিন্ন জায়গায় বেরিয়ে পড়ে। ছেলে জন্ম থেকেই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন। তবে চিকিৎসা হলে ঠিক হতে পারে। আর্থিক কারণে ছেলের চিকিৎসা করাতে পারিনি।
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন বিশুকে বিভিন্ন সময়ে মালদহের নানা জায়গায় ভিক্ষা করতে দেখা যায়। মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিন ইংলিশবাজার শহরে একটি পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে তাকে দেখতে পান জেলাশাসক। জেলাশাসকের নির্দেশ মতো দশম শ্রেণির ছাত্র বিশু ও তার পরিবার সরকারি কী কী পরিষেবা পাচ্ছে প্রশাসনের তরফে এদিন তার খোঁজখবর নেওয়া হয়। পাশাপাশি আরও কী কী সহযোগিতা প্রয়োজন সেটাও পরিবারের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়। পাশাপাশি সরকারি কিছু সহযোগিতা কিশোরের হাতে তুলে দেন বিডিও।