দু’পাশের সিঁড়িতে রড না থাকাতেই কি ভেঙে পড়ল আত্রেয়ী নদীর বাঁধ!
বর্তমান | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, পতিরাম: ড্যাম বরাবর নদীর বাঁধেই তৈরি হয়েছিল সিঁড়ি। কিন্তু কংক্রিটের সিঁড়ি হলেও ছিল না লোহার রড। এলাকাবাসীর দাবি, এই কারণে জলের স্রোতে শুরু হয়েছিল ভাঙন। আর সেই ভাঙনে কংক্রিটের ড্যাম বরাবর বাঁধের সিড়ি ভেঙে গিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের কাজ হয়েছিল বলেই সিঁড়ি ভেঙে পড়েছে। তারপরই স্লুইস গেটের ওপরে লোহার কংক্রিট ভেঙেছে। গত বছরই ৩২ কোটি টাকা দিয়ে এই ড্যাম নির্মিত হয়েছিল। এই ঘটনায় বড়সড় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার সেন্ট্রাল ডিজাইন অফিসের টিম এই ড্যাম পরিদর্শন করেন। তবে তাঁরা সিঁড়িতে লোহার রড থাকে না বলে দাবি করেছেন। সিডিউল মেনে কাজ হয়েছে বলে দাবি করেছেন সেচদপ্তরের আধিকারিকরা। তাই এবার নতুন করে ওই ড্যামের নকশা করা হচ্ছে। সেইমত ফের টেন্ডার করে এই কাজ হবে বলে সেচদপ্তর জানিয়েছে।
চব্বিশ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু জলের মধ্যে বালির বস্তা ফেলেও কিছু হয়নি। জল কমলে দেখা গিয়েছে, ড্যামের আগে অনেকটাই অংশ বসে গিয়েছে। তাই যেকোনও মূহুর্তে ফের একই রকম ঘটনার আশঙ্কায় ভুগছেন বাসিন্দারা। আধিকারিকদের আশ্বাস, আতঙ্কের কোনও ব্যাপার কিছু নেই।
এই ব্যাপারে রাজ্যের সেন্ট্রাল ডিজাইন অফিসের ডেপুটি ডিরেক্টর পিনাকী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ড্যামের মূল অংশ অক্ষতই রয়েছে। কোনওকারণে পাশ দিয়ে জল ঢুকে যাওয়ায় এই বিপত্তি হয়েছে। ডিজাইনের কোনও ভুল নেই। নদীর স্রোত নিজের মত চলে। তাই ডানদিক দিয়ে বয়ে যাওয়ার ফলেই এই সমস্যা হয়েছে। আমরা এই অংশের কাজের জন্য নতুন ডিজাইন করছি। তবে সিঁড়িতে লোহার রড থাকার সিডিউল ছিল না। যেহেতু বাঁধের উপর এই সিঁড়ি। তাই এভাবেই কাজ হয়।
এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার মৃত্যুঞ্জয় কুমার বলেন, সেন্ট্রাল ডিজাইন টিম বিষয়টি দেখছেন। তারা এখানকার নকশা করবেন। আমরা টেন্ডার করে ফের কাজ করব। মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে কাজ হবে। ড্যামের মূল অংশের ক্ষতি হয়নি। সিঁড়ি কংক্রিটের ছিল। যেভাবে সিডিউল ছিল, সেভাবেই কাজ হয়েছে। বর্ষার আগে এই কাজ শেষ হবে।
সেচদপ্তর সূত্রে খবর, রবিবার রাত থেকে শহরের আত্রেয়ী ড্যাম বাঁধের একাংশ ভাঙতে শুরু করেছিল। রাতের মধ্যেই সিঁড়ি ভেঙে তলিয়ে যায়। এমনকি স্লুইস গেটের ওপরে লোহার স্ট্রাকচার ভেঙে পড়ে। নদীর জল বাঁধ ভেঙে বয়ে যাচ্ছে। ফলে নদীর স্লুইস গেটের কাছে ড্যামের একাংশ বসে গিয়েছে।
উদ্বোধনের এক বছরের মধ্যেই বাঁধের একাংশ ভেঙে পড়ায় নানা অভিযোগ উঠছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার নিম্নমানের কাজের অভিযোগ তুলেছেন। এদিন ফের এক স্থানীয় বাসিন্দা বেনু হালদার বলেন, নিম্নমানের কাজের ফলে এই বিপত্তি হয়েছে। আতঙ্কিত আরও এক স্থানীয় যুবতী স্মিতাক্ষী দত্ত বলেন, রবিবার রাত থেকে ভয়ে রয়েছি। কিন্তু এখনও কাজ সেভাবে হয়নি। বালির বস্তা ফেলে কী এই ভাঙন রোখা যাবে? কবে টেন্ডার হবে, কবে কাজ হবে?