সুব্রত ধর, শিলিগুড়ি: ভাত ও রুটিতে অরুচি। চাই কাজুবাদাম, কিসমিস, আমন্ড সহ বিভিন্ন ধরনের ফল। এমন আবদার কোকেন কাণ্ডে ধৃত নাইজেরিয়ান যুবক গুডলাকের। পাঁচদিন ধরে শিলিগুড়িতে ধৃতের এমন আবদার মেটাচ্ছে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। অথচ ধৃতের কাছ থেকে পুলিস উল্লেখযোগ্য ‘ব্রেক-থ্রু’ পায়নি। জেরার সময় ধৃত পুলিস অফিসারদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ। ধৃতের এমন আচরণ নিয়ে কার্যত চোখ কপালে উঠেছে দুঁদে পুলিস অফিসারদের। এই অবস্থায় আজ, বুধবার কলকাতা থেকে এখানে আসছেন এসটিএফের শীর্ষ কর্তারা। তাঁরা সংশ্লিষ্ট মামলা নিয়ে আলোচনা করতে পারে বলে খবর।
যদিও, শীর্ষ পুলিস অফিসারদের একাংশ বলেন, আন্ডারওয়ার্ল্ডের অনেক বড় বড় দাগিরা পুলিসি জেরায় ভেঙে পড়ছে। ধৃত নাইজেরিয়ান যুবকও ভাঙবে। একটু সময় নিচ্ছে। তবে ধৃতের কাছ থেকে মাদক সিন্ডিকেট সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য মিলেছে। সেগুলি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
শিলিগুড়ি এনডিপিএস কোর্টের বিচারকের নির্দেশে ধৃত নাইজেরিয়ান যুবক এসটিএফ হেফাজতে রয়েছে। ধৃতের ঠাটবাটই অন্যরকম। পুলিস সূত্রে খবর, ধৃতকে শিলিগুড়ি থানায় রাখা হয়েছে। বিভিন্ন ঘটনায় ধৃত অভিযুক্তরা ভাত, রুটি, ডাল, সব্জি প্রভৃতি অনাআসে খাচ্ছে। কিন্তু গুডলাক ভাত ও রুটি খেতে নারাজ। সেসব খাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। দু’বেলাই তার কাজুবাদাম, আমন্ড, কিসমিস সহ বিভিন্ন ধরনের ফল চাই। আপেল, কমলালেবু, শসা প্রভৃতি। সঙ্গে চাই বোতলবন্দি মিনারেল ওয়াটার।
এনিয়ে পুলিসের একাংশ বলেন, ধৃতের আবদার মেটাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। সে থানার অ্যাকুয়াগার্ডের জল পান করবে না। দিলে নাক কুঁচকচ্ছে। তার বোতলবন্দি মিনারেল ওয়াটার চাই। সরকারি টাকায় ধৃতের আবদার পূরণ করতে হচ্ছে।
ধৃতের গায়ের রং কালো। উচ্চতা ৫ ফুটের বেশি। সুঠাম চেহারা। পুলিস সূত্রের খবর, রোজ সকালে ঘুম থেকে ওঠে সে লকআপেই শরীরচর্চা করছে। দীর্ঘক্ষণ ধরে ‘বুকডন’ দিচ্ছে। গা ঘামাচ্ছে। সেই সময় সে কারও সঙ্গে কথা বলছে না। ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিস অসিফারদের একাংশের সন্দেহ, ধৃত কোকেন সিন্ডিকেট চালালেও তা সেবন করে না বলেই মনে হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত ২ ফেব্রুয়ারি হরিয়ানার গুরুগ্রাম থেকে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে এসটিএফ। ৬ ফেব্রুয়ারি ধৃতকে শিলিগুড়ির এনডিপিএস সংক্রান্ত বিশেষ আদালতে তোলা হয়। ধৃতকে ১০ দিনের জন্য পুলিস হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট। ইতিমধ্যে ধৃতকে এসটিএফের পুলিস সুপার সহ শীর্ষ অফিসাররা জেরা করেছে। তদন্তকারী অফিসারদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, পাঁচদিন ধরে আবদার মিটিয়েও ধৃতের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য কিছু তথ্য মেলেনি। দিনের অধিকাংশ সময় সে স্বাভাবিকভাবেই কথা বলছে। কোকেন কাণ্ড নিয়ে জেরা করলে কিছু বলতে চাইছে না। সে তার আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলতে বলছে। এমনকী পুলিস অফিসারদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে।