নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মঙ্গলবার সকালে বালিগঞ্জের পাম অ্যাভিনিউর একটি স্কুলের একাংশে আগুন লাগে। সংস্কারের কাজ চলছে বলে স্কুলটি বন্ধ ছিল। দমকল ও পুলিস সূত্রে খবর, ওই স্কুলের চারতলার ঘরে বাতানুকূল যন্ত্র থেকে কোনওভাবে আগুন লাগে। দমকলের একটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে মিনিট পনেোরর চেষ্টায় আগুন নিভিয়ে ফেলে। এদিনই বেলেঘাটা খালপাড়ে চাউলপট্টির একটি ঝুপড়িতে আগুন লাগে। সামনেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি পণ্যবাহী গাড়ি আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
এদিকে, সোমবার রাতে তারাতলার কেপিটি কলোনিতে আগুন লাগার পর সেখানে এখন শুধুই হাহাকার। কোথাও আগুনের তাপে গলে গিয়েছে টিভি। কোথাও আবার নষ্ট হয়ে গিয়েছে নগদ টাকা, পুড়ে ছারখার হয়ে গিয়েছে খাট-আলমারি সহ যাবতীয় আসবাব। ভয়াবহ আগুনে পুড়ে খাক হয়ে গিয়েছে একের পর এক ঝুপড়ি। ২৬টি পরিবার এখন আশ্রয় হারিয়ে পথে বসেছে। আপাতত তাঁদের ঠিকানা কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের পুরনো একটি কোয়ার্টার। মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, সর্বস্ব খুইয়ে কপাল চাপড়াচ্ছেন দুলারি তিওয়ারি। তিনি বললেন, ‘ঘরে প্রায় ১২ হাজার টাকা ছিল। সব শেষ। আচমকা কীভাবে আগুন লাগল, বুঝতে পারনি। তারপর এক-এক করে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হতে শুরু করল। চোখের পলকে আমাদের সবকিছু গিলে নিল আগুন।’ একইরকম করুণ দশা সপরিবার নন্দকিশোর সিংয়ের। তাঁর ঘরের ধ্বংসস্তূপের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি একটি পুড়ে যাওয়া টিভির দিকে আঙুল দেখালেন। তাপ এতটাই বেশি ছিল যে সেটি টিভি বলে বোঝার উপায় নেই। পুড়ে গিয়েছে খাট, রান্নার বিভিন্ন সরঞ্জামও। নন্দকিশোর বলেন, ‘একটা জামাকাপড়ও বার করতে পারিনি। সব গিয়েছে আগুনের গ্রাসে।’ এদিনই সেখানে যান ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা নমুনা সংগ্রহ করেন। সোমবার রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছিলেন, বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। সেই মতো এদিন বাসিন্দাদের নাম-ঠিকানা সহ তালিকা বানিয়েছে পুলিস। কলকাতা পুরসভার তরফে আপাতত তাঁদের দরমার বেড়া দেওয়া ঘর তৈরি করে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে খবর। - নিজস্ব চিত্র