নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: পুণ্যার্থীদের প্রবল ভিড় দিয়ে শুরু হল বাঁশবেড়িয়ার মিনি কুম্ভ। রেওয়াজ মেনে মঙ্গলবার সপ্তর্ষি ঘাটের কাছের একটি মাঠে বিশেষ রুদ্র-অভিষেক দিয়ে মেলার আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। প্রথম দিনই চমকে দিয়েছে পুণ্যার্থীদের ভিড়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সাধুসন্তরা ধুনি আর যজ্ঞবেদী সাজিয়ে বসে আছেন। ভিড় সাধারণ মানুষেরও। মঙ্গলবার প্রথম দিন মালদহ থেকে এসেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র। মানিকচকের বিধায়ক সাবিত্রীদেবী এদিন সপ্তর্ষি ঘাটে গঙ্গা স্নান করেন। মঙ্গলবার বিশেষ গঙ্গা আরতির আয়োজন ছিল।
পাশাপাশি বুধবারের শাহি স্নানের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। মাঘী সংক্রান্তির স্নানের জন্য নেওয়া হয়েছে বিশেষ প্রস্তুতি। ১৭ শক্তিপীঠের জল দিয়ে এদিন সপ্তর্ষি ঘাটে গঙ্গা অভিষেক হয়। উদ্যোক্তাদের দাবি, এটি শাহি স্নানের প্রাক্কালের বিশেষ রীতি। কুম্ভকে কেন্দ্র করে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থাও এদিন দেখা গিয়েছে। প্রবল ভিড়ের জন্য স্থানীয় দোকানগুলি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। গঙ্গার ঘাটের বিশেষ বিশেষ অংশে নির্দিষ্ট দূরত্ব পর্যন্ত ঘেরা জাল দিয়ে। রাখা হয়েছে প্রচুর জৈব শৌচালয়। পুলিসি নজরদারিও ছিল চোখে পড়ার মতো। বাঁশবেড়িয়া পুরসভার চেয়ারম্যান আদিত্য নিয়োগী বলেন, ‘সবরকমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিরাপত্তার আয়োজন থেকে পরিষেবা প্রদান সবই বহাল। শাহি স্নানের জন্য যা যা প্রয়োজন সব করা হয়েছে। সঙ্গে নজরদারি চলছে।’ সাবিত্রীদেবী বলেন, ‘রাজ্য বাজেট আছে। বাংলার মানুষের জন্য কল্পতরু মুখ্যমন্ত্রীর নির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রকাশ্যে আসবে। বাজেটের সাফল্য কামনায় পুণ্য স্নান সেরেছি। পুরসভা ও রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় বাংলার কুম্ভ বিশেষ আকর্ষণীয় হয়েছে।’ কুম্ভ স্নান ও মেলার অন্যতম উদ্যোক্তা কাঞ্চন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বিশেষ আরতি উৎসবে অনেক পুণ্যার্থী সমাগম হয়েছিল। বুধবার শাহি স্নানপর্বের জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
ত্রিবেণীর সাবেক ঐতিহ্য দাবি করে কুম্ভমেলার আয়োজন শুরু হয় ২০২২ সালে। ২০২৫ সালে এসে সেই কুম্ভ মেলা সাধুসন্তদের অন্যতম গন্তব্য হয়ে উঠেছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে ত্রিবেণীর সপ্তর্ষি ঘাটে ছিল সাধুদের বিপুল ভিড়। ছিল প্রচুর ভক্তসমাগমও। বিধিবদ্ধ পদ্ধতিতে নাগা ও অন্যান্য সাধুদের উপস্থিতিতে কুম্ভ মেলা শুরু হয়। মন্ত্রোচ্চারণ আর যজ্ঞের আয়োজনে এলাকা মুখর হয়ে ওঠে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর মন কি বাত অনুষ্ঠানে বাঁশবেড়িয়ার কুম্ভ মেলার ঐতিহ্যের উল্লেখ করেছিলেন। সেই প্রসঙ্গ তুলে উদ্যোক্তারা ব্যানার টাঙিয়েছেন। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছাবার্তা দিয়ে ছেয়ে দেওয়া হয়েছে কুম্ভ প্রাঙ্গণ। তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ, বুধবার শাহি স্নান পর্বে হাজির থাকার সম্ভাবনা হুগলির সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।