সন্দীপের নামে অভিযোগ গুরুতর, প্রভাব সুদূরপ্রসারী, মন্তব্য হাইকোর্টের
বর্তমান | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর। আর জি করে আর্থিক দুর্নীতি মামলায় মঙ্গলবার এমন মন্তব্যই করল হাইকোর্ট। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির মন্তব্য, এই ধরনের দুর্নীতি প্রশাসনের অভ্যন্তরে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে। স্বাস্থ্যব্যবস্থা তথা প্রশাসনও এতে দূষিত হয় বলে মত বিচারপতির। এছাড়া, এদিন ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট করে দিয়েছে, যেহেতু মেডিক্যাল কাউন্সিলের সিদ্ধান্তে সাসপেনশনে রয়েছেন সন্দীপ ঘোষ, তাই আদালত তাঁকে এখন নামের আগে ‘চিকিৎসক’ হিসেবে দেখবে না। এদিন বিচারপতি বাগচির পর্যবেক্ষণ, ‘অভিযোগ খুব গুরুতর, অভিযুক্তরা সব জেলে। দুর্নীতির ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক সাজা না-হলে বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের ভরসা থাকবে না। স্বাস্থ্যের মতো ক্ষেত্রকে কালিমালিপ্ত করার অভিযোগ গুরুতর।’
আর জি কর আর্থিক দুর্নীতি কাণ্ডে তদন্তকারী সংস্থা তথা সিবিআইয়ের কাছ থেকে মামলা সংক্রান্ত নথি পেতে সমস্যা হচ্ছে। এমন অভিযোগ জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সন্দীপ-সহ মামলায় বাকি অভিযুক্তেরা। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানি পর বিচারপতি বাগচি এবং বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, আদালত মনে করছে যে ধরনের অভিযোগ রয়েছে, তাতে আইন মেনে দ্রুত বিচার হলে সাধারণ মানুষের মনে বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা বৃদ্ধি পাবে। কারণ এই মামলায় সরকারি আধিকারিকেরা যুক্ত রয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগের দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়া উচিত বলেও মনে করছে আদালত।
এদিন সন্দীপের আইনজীবীরা জানান, ৪৬২টি নথির মধ্যে সিবিআইয়ের থেকে ২১৬টি নথি তাঁরা পেয়েছেন। বিচারপতি বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, বুধবারের মধ্যে সিবিআইকে এই সংক্রান্ত বাকি নথি দিতে হবে। নথি পাওয়ার পরে অভিযুক্তরা নিজেদের বক্তব্য নিম্ন আদালতে জানাতে পারবেন। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
এর আগে আদালত, সন্দীপদের চার্জশিট সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নথি দিতে সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছিল। আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে আর জি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অতিরিক্ত সুপার আখতার আলির দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথম গ্রেপ্তার হয়েছিলেন সন্দীপ। সিবিআই দপ্তরে টানা কয়েকদিন জেরা করার পরই গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। পরে এই মামলায় বিপ্লব সিংহ, আফসার আলি এবং সুমন হাজরাকেও গ্রেপ্তার করে সিবিআই। এই মামলায় শেষে গ্রেপ্তার হন আশিস পান্ডে। তাঁরা প্রত্যেকেই আপাতত জেলবন্দি রয়েছেন।