• সৌদি আরবের ভিসার খোঁজে মেয়রের দোরে নদিয়ার যুবক
    এই সময় | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়: কলকাতা পুরসভার সদর দপ্তরে, মেয়র ফিরহাদ হাকিমের ঘরের ঠিক সামনে, হাই সিকিউরিটি জ়োনে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাফেরা করা যুবক বাংলাদেশের নাগরিক নন, তাঁর বাড়ি নদিয়ার চাপড়ায় বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে। রফিকুল ইসলাম ওরফে পটল নামে বছর তিরিশের ওই যুবকের বাড়ির লোকজন কলকাতা পুলিশের তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, তিনি মানসিক ভাবে অসুস্থ, তাঁর চিকিৎসাও চলছে।

    তিনি কর্মসূত্রে দু’বার সৌদি আরবে গিয়েছিলেন, তৃতীয় বার যাওয়ার জন্য ভিসা পেতে চেষ্টা করছিলেন। সোমবার দুপুরে মেয়রের ঘরের সামনে নিরাপত্তারক্ষীরা ওই যুবককে আটক করে তাঁর কাছ থেকে একটি পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করেন। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরসভায় রটে যায় যে, ভুয়ো পাসপোর্ট সমেত ধরা পড়েছেন এক বাংলাদেশি। তবে তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সত্য সামনে আনল কলকাতা পুলিশ। রফিকুলকে গ্রেপ্তার না–করা হলেও পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে।

    ভুয়ো পাসপোর্ট–চক্র নিয়ে এবং হালফিলের অস্থির বাংলাদেশ থেকে এ পারে বেশ কয়েক জনের অনুপ্রবেশের ঘটনায় সতর্ক কলকাতা ও রাজ্য পুলিশ। ভুয়ো পাসপোর্ট–চক্রে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে বেশ কয়েক জনকে। এই পরিস্থিতিতেই সোমবার কলকাতা পুরসভার সদর দপ্তরে ওই ঘটনা।

    তদন্তকারীদের বক্তব্য, রফিকুলের এক আত্মীয় কলকাতা পুলিশেই কর্মরত। তাঁর আর এক আত্মীয় রয়েছেন সেনায়, ফোর্ট উইলিয়মে তাঁর কর্মস্থল। রফিকুলকে সোমবার আটক করার পর ওই দু’জনের সঙ্গে তদন্তকারীরা যোগাযোগ করেন। ফোর্ট উইলিয়মে কর্মরত, রফিকুলের আত্মীয় কাজল গায়েন নিউ মার্কেট থানায় গিয়ে রফিকুলের মেডিক্যাল রিপোর্ট জমা দেন। সেই নথি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি রফিকুলের কাছ থেকে যে পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়েছে, সেটাও তদন্তকারীরা খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে দেখেন। তার পরেই জানা যায়, ওই পাসপোর্ট ভুয়ো নয়, রফিকুলও বাংলাদেশি নন।

    তবে প্রশ্ন উঠেছে, ভিসার জন্য রফিকুল কেন পুরসভার সদর দপ্তরে গেলেন? সেখানে কি কেউ তাঁকে ভিসা পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন?

    প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, নদিয়ার চাপড়া থেকে রফিকুল বেনিয়াপুকুর এলাকার দরগা রোডের একটি এজেন্সির সঙ্গে ভিসার জন্য যোগাযোগ করেছিলেন। ভিসা পেতে তিনি ১০ হাজার টাকা, পাসপোর্ট এবং অন্য প্রয়োজনীয় নথি জমা দেন ওই এজেন্সিতে। তবে শেষ পর্যন্ত ওই এজেন্সি তাঁকে ‘এখন ভিসা পাওয়া যাবে না’ বলে জানিয়ে পাসপোর্ট ফেরত দেয়। তার পরেই তিনি কলকাতা পুরসভায় চলে যান। পুলিশ জেনেছে, ২০১৬ সালে রফিকুল সৌদি আরবে গিয়ে তিন বছর ছিলেন। পরে আবার সৌদি আরবে কাজে যান রফিকুল, ফেরেন ২০২৩ সালে। তাঁর দুই ভাইও সৌদি আরবে কর্মরত।

  • Link to this news (এই সময়)