এই সময়: ‘লতা দিদি’, ‘রয়্যাল বেঙ্গল’, ‘ক্রাউন জুয়েল’ — এদের মধ্যে মিল কোথায়? কোনও ক্যুইজ়ে এমন প্রশ্ন করা হলে সেই প্রশ্নের ঠিকঠাক জবাব যিনি দিতে পারবেন তাঁকে অবশ্যই গোলাপ বিশেষজ্ঞ হতে হবে।
কারণ, এই তিনটি হাইব্রিড গোলাপের তিন প্রজাতি। এদের মধ্যে আরও অন্তত দু’টো মিল আছে। প্রথমত, তিনটি প্রজাতিই তৈরি হয়েছে বাংলায় এবং আসন্ন ভ্যালেন্টাইন্স ডে উপলক্ষে এই তিন প্রজাতির গোলাপের জনপ্রিয়তাই সবচেয়ে বেশি।
সারা বছর গোলাপের রং নিয়ে যত রকম পরীক্ষা–নিরীক্ষাই চলুক না কেন, বছরের এই একটা সময়ে লাল গোলাপের চাহিদা বুঝিয়ে দেয় ওই রঙের মাহাত্ম্য। গোলাপ–গবেষকরা জানাচ্ছেন, গত কয়েক বছর ধরে গন্ধ ক্রমশ ব্রাত্য হয়ে গোলাপের সৌন্দর্যই প্রধান হয়ে উঠেছিল পুষ্পপ্রেমীদের কাছে।
তবে এ বছর রসিক মানুষজন গোলাপের রং ও সৌন্দর্যের পাশাপাশি গন্ধের প্রতিও আকৃষ্ট হতে শুরু করেছেন বলে খবর বেঙ্গল রোজ় সোসাইটি সূত্রে। তবে ভ্যালেন্টাইন্স ডে এবং গোলাপের চিরস্থায়ী সম্পর্কের মধ্যে সবচেয়ে জমাটি খবর এ বার বাংলার ব্রিডাররাই দিচ্ছেন। এ বছরের সবচেয়ে জনপ্রিয় লাল গোলাপের মধ্যে তিনটিই তৈরি করেছেন বাংলার ব্রিডাররা।
বেঙ্গল রোজ় সোসাইটির যুগ্ম সম্পাদক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ের হাতে তৈরি হয়েছিল নতুন প্রজাতির একটি লাল গোলাপ। লতা মঙ্গেশকরের নামে সেই গোলাপের নামকরণ করা হয় ‘লতা দিদি’। সঞ্জয় বলছেন, ‘সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বাংলার ব্রিডাররা অত্যন্ত সম্মানিত। কিছুদিন আগেই গোটা দেশের মধ্যে সেরা প্রজাতির নতুন গোলাপের স্বীকৃতি পেয়েছিল বাংলার ‘ক্রাউন জুয়েল’।
এ ছাড়াও ‘রয়্যাল বেঙ্গল’ এবং ‘লতা দিদি’ গোলাপেরও চাহিদা খুব বেশি।’ সঞ্জয় বলেন, ‘বাংলার নতুন প্রজন্ম কিন্তু আবার গোলাপে গন্ধ চাইছে। সেই মতো গোলাপ তৈরির গবেষণা চলছে এখন।’
তবে শুধুই আঁটসাঁট গড়নের এবং লাল টুকটুকে গোলাপ নয়, একই সঙ্গে খোঁজ চলছে সেই গোলাপ যতটা সম্ভব তরতাজা রাখার উপায়েরও। এই প্রসঙ্গে গোলাপ বিশেষজ্ঞ মেঘবরণ গুঁই বলেন, ‘গ্লুকোজ মেশানো জলে যদি গোলাপ রেখে দেওয়া হয় তা হলে সেই গোলাপ অনায়াসেই তিন–চার দিন তাজা থাকবে। গ্লুকোজের অভাবে জলে চিনি মিশিয়ে নেওয়াও যেতে পারে।’
সুতরাং শুক্রবার যাঁরা বিশেষ জনকে গোলাপ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন, তাঁরা যদি ইতিমধ্যেই গোলাপ কিনে থাকেন তা হলে মাঝের দু’দিনে সেই গোলাপ তাজা রাখতে বিশেষ সমস্যা হবে না।