• এগারো বছর ধরে মামলাতেও মেলেনি টাকা, কোর্টেই মারধর
    এই সময় | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়, তমলুক: সাইকেল ব্যবসার জন্যে প্রতিবেশী মহিলার থেকে চার লাখ টাকা নিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। নির্দিষ্ট সময়ে সেই টাকা ফেরতের কথা ছিল। সেই সময় পেরিয়ে গেলেও টাকা পাননি কোলাঘাটের চিমুটিয়া গ্রামের প্রৌঢ়া। বার বার টাকা চাইতে গেলে উল্টে জুটেছে গালিগালাজ। শেষমেশ ওই প্রৌঢ়াকে একটি চেক দেন সেই প্রতিবেশী ব্যক্তি। কিন্তু সেই চেক বাউন্স করে। প্রৌঢ়া অভিযোগ করেন কোলাঘাট থানায়, তমলুক কোর্টে মামলাও করেন। ১১ বছরেও নিষ্পত্তি হয়নি সে মামলার। মঙ্গলবারও শুনানি ছিল। ওই প্রৌঢ়া ও তাঁর প্রতিবেশী হাজির হয়েছিলেন। অভিযোগ, প্রৌঢ়া এ দিন ব্যাগে করে হাতা–খুন্তি–বাটাম নিয়ে এসেছিলেন। কোর্ট চত্বরেই তিনি ব্যাগ থেকে বাটাম বার করে প্রতিবেশী সেই ব্যক্তিকে মারধর শুরু করেন। পুলিশ এসে আটকায়। তমলুক থানার আইসি সুভাষ ঘোষ অবশ্য জানান, থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ হয়নি।

    তবে ভরদুপুরে কোর্ট চত্বরে ওই ঘটনায় উত্তেজনা তৈরি হয়। বিচারপ্রার্থী প্রৌঢ়া পরে সিজেএমের এজলাসে দাঁড়িয়ে ওই ঘটনার জন্যে ক্ষমাও চান। এজলাসের বাইরে বেরিয়ে হাতে থাকা ব্যাগের ভিতরে হাতা, খুন্তি দেখিয়ে অভিযুক্ত অমল মাইতির উপরে হামলার কথা স্বীকার করেন। আইনজীবী অরিন্দম খাটুয়া বলেন, ‘আদালতে বিচার পেতে আসেন সাধারণ মানুষ। এ ভাবে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া উচিত নয়। আদালতের উপরে ভরসা রাখতে হবে।’ তবে ১১ বছরেও মামলার নিষ্পত্তি না–হওয়াতেই প্রৌঢ়ার ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটেছে বলেও মনে করছেন অনেক আইনজীবী।

    পুলিশ জানিয়েছে, ২০১৪ সালে কোলাঘাট থানার চিমুটিয়া গ্রামের অমল প্রতিবেশী কৃষ্ণা বর্মনের কাছ থেকে সুদের বিনিময়ে চার লক্ষ টাকা নেন। ওই টাকা ফেরত দেওয়া নিয়ে কৃষ্ণাকে দীর্ঘদিন ঘোরান অমল। পরে প্রৌঢ়াকে একটি চেক দেন অমল। কৃষ্ণার দাবি, সেই চেক ব্যাঙ্কে ভাঙাতে গেলে বাউন্স করে। প্রৌঢ়া থানায় অভিযোগ করেন, তমলুক কোর্টে চেক বাউন্সের মামলা করেন। তার পর ১১ বছর অতিক্রান্ত। কষ্টের টাকা ধার দিয়ে ফেরত না পেয়ে কৃষ্ণার মধ্যে তৈরি তীব্র ক্ষোভেরই বিস্ফোরণ ঘটে মঙ্গলবার আদালত চত্বরে। তবে আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ–পর্ব শেষ হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই হবে রায়দান। আপাতত সে দিকেই তাকিয়ে কৃষ্ণা।

  • Link to this news (এই সময়)