• ‘আশায় আশায় বসে আছি...’, আসছে উড়ো ফোন
    এই সময় | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • প্রবীর কুণ্ডু, মাথাভাঙা

    ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে জীবনে প্রথমবার ট্রেনে চেপে কুম্ভস্নানে গিয়ে প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে নিখোঁজ মাথাভাঙার মহিলা। মাকে খুঁজে না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে এসেছেন ছেলে বিপ্লব দাস। আত্নীয়দের সঙ্গে নিয়ে স্টেশনে স্টেশনে ঘুরেও হদিশ মেলেনি মায়ের। তাঁর সন্ধান পেতে স্টেশনের দেওয়ালে লাগানো হয়েছে ছবি–ফোন নম্বর–সহ নিখোঁজের পোস্টার। আর সেই পোস্টারের জেরে অহরহ উড়ো ফোনে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে পরিবার৷

    কখনও ফোন করে বলা হচ্ছে, মায়ের খোঁজ দেবেন তারা। এরপরেই ফোন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে আবার কখনও ফোন করে কী হয়েছে, কেমন ভাবে নিখোঁজ হলেন, তা জানতে চাওয়া হচ্ছে। এই উড়ো ফোনের জেরে জেরবার হয়ে যাচ্ছে নিখোঁজের পরিবার। পাশাপাশি মহিলার খোঁজ না পেয়ে মাথাভাঙা থানার পশ্চিম খাটেরবাড়ি এলাকার পরিবারের দিন কাটছে চরম দুশ্চিন্তায়।

    ২৭ জানুয়ারি ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে কুম্ভ স্নানের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন মাথাভাঙার বছর পয়তাল্লিশের তাপসী দাস। স্নান সেরে বাড়ি ফেরার জন্য ট্রেনে চেপেছিলেন ৩০ জানুয়ারি। ট্রেনে অত্যাধিক ভিড়ে ঠাসাঠাসি হয়ে যাওয়া অসম্ভব বুঝে বারাউনি স্টেশনে নেমে পড়েন মা–ছেলে৷ এরপরে হাজার হাজার মানুষের ভিড়ের মধ্যে আলাদা হয়ে যান মা ও ছেলে৷ মা হয়তো কোনও ভাবে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন ভেবে ছেলে মাথাভাঙায় ফোন করলে পরিবারের সদস্যরা জানান, তাপসী ফিরে আসেনি।

    এর পর বাড়ি ফিরে আত্মীয়দের নিয়ে ফের বারাউনি স্টেশনে যান বিপ্লব। মায়ের ছবি ও নিজের মোবাইল নম্বর দিয়ে নিখোঁজের পোস্টার সাঁটানো হয় বারাউনি স্টেশনে ও লাগোয়া এলাকায়৷ তবে এখন পর্যন্ত মহিলার খোঁজ না মিললেও উড়ো ফোনে, ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা পরিবারের সদস্যদের। বিপ্লব বলেন, ‘কেউ ফোন করে বলছে ধূপগুড়ি থেকে বলছি, আপনার মায়ের খোঁজ পেয়েছি৷ আমরা কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই ফোন কেটে দিচ্ছে। আবার কেউ ফোন করে জানতে চাইছে কবে নিখোঁজ হয়েছেন৷ আমাদের কাছে এখনও পর্যন্ত মায়ের কোনও তথ্য নেই।’

    মাথাভাঙা থেকে যাঁরা কুম্ভে রওনা হয়েছেন, পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁদের সকলের কাছে মোবাইল ছবি পাঠিয়ে তাপসীর খোঁজ নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। মহিলার স্বামী নিরঞ্জন দাস বলেন, ‘কুম্ভ স্নানে গিয়ে যে এমন বিপদ নেমে আসবে তা স্বপ্নেও ভাবিনি৷’ এ ব্যাপারে ১ ফেব্রুয়ারি মাথাভাঙা থানায় লিখিত অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি বারাউনি স্টেশনে গিয়ে পরিবারের সদস্যরা রেল পুলিশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেছেন। কিন্তু শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে তাঁদের। মায়ের নিখোঁজের টেনশনের পাশাপাশি বড় হয়ে উঠেছে ভুয়ো ফোনের উৎপাত। মাথাভাঙা থানার পুলিশ জানিয়েছে, নিখোঁজ মহিলার খোঁজে তদন্ত চলছে৷

  • Link to this news (এই সময়)