এই সময়, দিঘা: দীর্ঘ ১৪ বছর বন্ধ থাকার পর পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরের সমুদ্রোপকূলবর্তী এলাকায় জমির মিউটেশন ও কনভারশন শুরু হলেও সিআরজেড (কোস্টাল রেগুলেশন জ়োন) এলাকা নিয়ে জটিলতা কাটল না। তবে দীর্ঘদিন পরে রামনগর ১ ও ২ ব্লকের উপকূলবর্তী এলাকায় জমির মিউটেশন ও কনভারশনের কাজ শুরু হওয়ায় খুশি এলাকার মানুষ।
ইতিমধ্যে আটকে থাকা জমির কয়েকশো আবেদনপত্রও জমা পড়েছে দুটি ব্লকের ভৃমিদপ্তরে। সিআরজেড এলাকা (সমুদ্র সৈকত থেকে যতটা দূরে নির্মাণের কাজ করা যায়) চিহ্নিত না হওয়ায় পর্যন্ত নির্মাণের অনুমতির বিষয় পরিষ্কার ভাবে বলতে পারেননি প্রশাসনিক কর্তারাও। সিআরজেড আইন হলো, সমুদ্রের জোয়ারভাটা এলাকা থেকে ৫০০মিটারের বাইরে নির্মাণের অনুমতি। পঞ্চায়েত সমিতি ও উন্নয়ন পর্ষদ নির্মাণের অনুমতি।
কাঁথির মহকুমাশাসক সৌভিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘মিউটেশান, কনভারশান আলাদা ও হোটেল তৈরির অনুমোতির বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা। নানা কারণে দিঘা তাজপুর শঙ্করপুর মন্দারমণি এলাকার জমির মিউটেশন ও কনভারসান শুরু হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা এ বার বৈধ ভাবে জমির কেনাবেচা বা জমি হস্তান্তর করতে পারবেন। যে কোনও জমি কেনাবেচার ক্ষেত্রে জমির মিউটেশন ও জমির কনভারশন জরুরি।’
রামনগর ১ পঞ্চায়েত সমিতি এলাকার মধ্যে দিঘা, শঙ্করপুর,তাজপুর ও রামনগর ২ পঞ্চায়েত সমিতি এলাকার মধ্যে পড়ে মন্দারমণি পর্যটন কেন্দ্র। সম্প্রতি পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে মন্দারমণির ১৪০টি হোটেল ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা যশাসক।
যদিও বিষয়টি বর্তমানে আদালতের বিচারাধীন। এরপর অবৈধ নির্মাণের অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১২টি হোটৈল কর্তৃপক্ষকে নোটিস পাঠানোর পাশাপাশি আদালতে মামলা করেছে মন্দারমণি কোস্টাল থানার পুলিশ। এই সিআরজেড এলাকা নিয়ে জটিলতার কারণে ২০১০ সালে জেলা প্রশাসন উপকূলবর্তী এলাকার জমির মিউটেশন ও কনভারশন আপাতত স্থগিত বলে নোটিশ জারি করে পূর্ব মেদিনীপর জেলা প্রশাসন। এর পর থেকে উপকূলবর্তী ৫৬টি মৌজায় মিউটেশান ও কনভারশান বন্ধ হয়ে যায়। তবে ২০২৫ সালের প্রথমে জেলা প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়ায় জমির চরিত্র ও মালিকানা পরিবর্তন আবার শুরু হয়েছে।
রামনগর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নিতাই সার বলেন, ‘জমির মিউটেশন, কনভারশন চালু হওয়ার পর দিঘা তাজপুরের থেকে ১৩০টি আবেদন জমা পড়েছে। এগুলির মধ্যে ৭০ শতাংশের কনভারশান প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’ জানা গিয়েছে, জমির মিউটেশন, কনভারশন শুরু হলেও হোটেল নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হবে সিআরজেড নিয়ম মেনে। তবে এখন পর্যন্ত সিআরজেড এলাকা ম্যাপিং–এর কাজ না হওয়ায় কারণে হোটেল নির্মাণের অনুমতি এখনই দেওয়া হচ্ছে না। তবে যদি কেউ নির্মাণকাজ করতে চায় তাহলে তাকে সিআরজেড নিয়ম মেনে বাড়ি ও হোটেল তৈরি করতে হবে। সিআরজেড নোটিফিকেশান অনুসারে, সমুদ্রের জোয়ার ভাটা এলাকা থেকে ৫০ মিটারের মধ্যে কোনও নির্মাণই করা যাবেনা। ৫০ মিটার থেকে ১০০মিটারের মধ্যে গাছ লাগানো ও বিউটিফিকেশান করা যাবে। ১০০-৩০০মিটারের মধ্যে কংক্রিট ছাড়া কটেজ নির্মাণ আর ৩০০-৫০০মিটারের মধ্যে ও কটেজ নির্মাণ করা যাবে। আর ৫০০মিটারের বাইরে হোটেল নির্মাণ করা যাবে।