মহাকুম্ভে পুণ্যস্নান করে বাড়ি ফেরা হলো না রাজ্যের এক ব্যবসায়ীর। কুম্ভস্নান শেষে বাড়ি ফেরার পথে ট্রেনে মৃত্যু হয়েছে শিলিগুড়ির ওই ব্যবসায়ীর। মৃতের নাম রমেশ জয়সওয়াল (৪৯)। তাঁর মৃত্যু জন্য রেলের অব্যবস্থাকেই দায়ী করছেন পরিবারের লোকজন। মৃতের পরিবারের অভিযোগকে কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন শিলিগুড়ির বিজেপি নেতাও।
বুধবার, মাঘী পূর্ণিমায় অমৃতস্নান করেছেন ২ কোটির বেশি মানুষ বলে জানিয়েছে উত্তরপ্রদেশের সরকার। মৌনী অমাবস্যায় মহাকুম্ভে স্নান করতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছিল ৩০ জন পুণ্যার্থীর । তাঁদের মধ্যে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের ৬ জন। সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রয়াগ সঙ্গমে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও সেখানের অব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন থেকে গিয়েছে। এই অব্যবস্থা থাকার অভিযোগ উঠেছে রেলের বিরুদ্ধেও। রেলের চূড়ান্ত অব্যবস্থার বলি হয়েছেন শিলিগুড়ির ব্যবসায়ী রমেশ কুমার জয়সওয়াল বলে অভিযোগ।
জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বিধান মার্কেটের বাসিন্দা রমেশ গত ৭ তারিখে বন্ধুদের সঙ্গে মহাকুম্ভ-এ গিয়েছিলেন। মঙ্গলবার রাতে রাজধানী এক্সপ্রেসে করে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন তিনি।
রাজধানী এক্সপ্রেসের এসি এ১ কোচের ১৩ নম্বর সিটে আসার কথা ছিল তাঁর। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রয়াগরাজ স্টেশনে ভিড়ে চরম অপ্রীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। প্রচণ্ড ভিড়ের চাপে দমবন্ধকর পরিস্থিতিতে মৃত্যু হয় তাঁর।
জানা গিয়েছে, প্রয়াগরাজ স্টেশনে অন্য ট্রেনের মতোই বিনা টিকিটে জোর করে উঠে পড়েন রাজধানী এক্সপ্রসেও। যার জেরে তিল ধারণের জায়গা ছিল না কামরায়। অত্যধিক ভিড়ে দমবন্ধকর পরিস্থিতিতে ট্রেন ছাড়ার কিছুক্ষণ পর থেকে শারীরিকভাবে অসুস্থ বোধ করেন তিনি। বন্ধুদের জানালে, তাঁরা তাঁকে দ্রুত পাটনা স্টেশনে রেল কর্তৃপক্ষ এবং আরপিএফের সাহায্যে নামিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করতে নিয়ে যান। হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরে তাঁর দেহ পাটনা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পরে নিয়ে আসা হয় শিলিগুড়িতে। তাঁর স্ত্রী ছাড়াও দুটি নাবালক সন্তান আছে।
দেহ সেখানে আসার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে রমেশের পরিবার। ট্রেনে চরম অব্যবস্থার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন তাঁরা । ওই পরিবারের অভিযোগ, রেলের চরম অব্যবস্থার কারণে শ্বাসকষ্টে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
ওই ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা জেলা বিজেপির নেতা নান্টু পালও রেলের অব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। রেল আধিকারিক এবং প্রশাসনকে আরও সতর্ক হওয়ার আর্জি জানান তিনি।