সকাল ও দুপুরে তাপমাত্রার হেরফের, ঘরে ঘরে সর্দিজ্বর
বর্তমান | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: হাওয়া বদলের সঙ্গে সঙ্গে মরশুমি জ্বর-সর্দিতে নাকাল হচ্ছে বাঁকুড়াবাসী। ঘরে ঘরে সর্দি, কাশি, জ্বরের উপসর্গ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে জেলাবাসীকে যা নতুন করে বিড়ম্বনায় ফেলেছে। যদিও এনিয়ে অযথা উতলা হওয়ার কিছু নেই বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ সর্দি-জ্বরের (কমন কোল্ড) প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। পরে তা আবার ধীরে ধীরে কমে যায়। তবে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে ওষুধ খাওয়া জরুরি বলে তাঁরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন। বাড়িতে বসে নিজের পছন্দমতো ওষুধ খেলে রোগ নিরাময়ের পরিবর্তে জটিলতা বাড়তে পারে বলে চিকিৎসকরা সতর্ক করে দিয়েছেন।
বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমএসভিপি অর্পণকুমার গোস্বামী বলেন, ঋতু পরিবর্তনের ফলে বর্তমানে দুপুরের দিকে তাপমাত্রা অনেকটাই বৃদ্ধি পাচ্ছে। চড়া রোদে রাস্তায় বের হওয়া মানুষজনের কার্যত গলদঘর্ম অবস্থা হচ্ছে। আবার সকাল-সন্ধ্যায় ঠান্ডায় গরম জামাকাপড় পরতে হচ্ছে। তাপমাত্রার এই তারতম্যের কারণে সর্দি-জ্বর বা ভাইরাল ফিবারে অনেকে আক্রান্ত হচ্ছে। এইসময় শিশু ও বয়স্কদের স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।
মেডিক্যালের এক চিকিৎসক বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে বর্তমানে সর্দি-জ্বরে ভোগার আশঙ্কা থেকেই যায়। এইসময় ভোরের দিকে ফ্যান না চালানোর জন্য আমরা পরামর্শ দিয়ে থাকি। কারণ ওইসময় তাপমাত্রা অনেকটাই নেমে যায়। বর্তমানে সন্ধ্যার পর শিশির পড়ছে। ফলে ওইসময় থেকে খোলা আকাশের নীচে না বসার জন্য সকলকে বলা হচ্ছে। একান্তই ফাঁকা জায়গায় থাকলে মাথায় টুপি বা রুমাল জাতীয় কিছু নিতে হবে। সাবধানতা অবলম্বন করার পরেও কারও ঠান্ডা লাগলে দিনে তিন-চার বার হালকা গরম জলে ভাঁপ নিলে সর্দি থেকে উপশম পাওয়া যায়। গলা ব্যথা হলে গরম জলে নুন মিশিয়ে, তা দিয়ে ‘গার্গল’ করলে কমে যাবে। প্রয়োজন মতো তা দিনে দু-তিনবার করতে হবে। জ্বর থাকলে প্যারাসিটামল ট্যাবলেট নির্দিষ্ট সময় অন্তর খাওয়া যেতে পারে। তেমন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সাধারণ সর্দি-জ্বরের চিকিৎসা হয়। তা মূলত আউটডোরেই হয়ে থাকে। ফলে কারও ওই ধরনের কোনও সমস্যা হলে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, প্রতি বছর শীতের শুরু এবং বিদায় লগ্নে আবহাওয়া দ্রুত পরিবর্তনশীল হয়। দিন এবং রাতের তাপামাত্রায় অনেক ফারাক থাকে। গরমভাব থাকায় রাতে শুতে যাওয়ার সময় অনেকে ঘরের জানালা খোলা রাখেন। ভোরের দিকে খোলা জানালা হয়ে ঘরের মধ্যে হিমেল বাতাস ঢোকে। তাতে ঠান্ডা লাগার আশঙ্কা থাকে। আবার অনেকে এই সময় ফ্যান চালিয়ে রাতে ঘুমান। ভোরে ফ্যানের শীতল হাওয়া শরীর নিতে পারে না। ফলে সর্দি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এই দুই সময়ে সতর্ক থাকতে হবে।