• ‘মিনিবাঁধে’ই বিপত্তি, আত্রেয়ীতে দ্বিগুণ শ্রমিক দিয়ে বালির বস্তা সরাচ্ছে সেচদপ্তর  
    বর্তমান | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, পতিরাম: আত্রেয়ী বাঁধের আগে বালির বস্তা দিয়ে ছিল ‘মিনিবাঁধ’। যার জেরে পশ্চিমদিকে ক্রমশ বাড়ছিল জলের চাপ। সেই চাপেই বাঁধে বিপত্তি। জল ছেড়ে দেওয়ায় নদীর মাঝে সেই বালির বস্তার স্তুপের এখন দেখা মিলেছে। বাঁধ বিপত্তির কারণ হিসেবে এমনই মনে করছে ইঞ্জিনিয়াররা। তাই তড়িঘড়ি নদীর মাঝ থেকে বালির বস্তাগুলি সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দ্বিগুন কর্মী রেখে মিনি বাঁধ সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।  


    প্রশ্ন উঠছে, বালির বস্তার স্তুপগুলো কেন আগে সরানো হয়নি? যদিও সেচদপ্তরের দাবি, নদীতে জলের স্রোত বেড়ে যাওয়ায় বালির বস্তা সরানো যায়নি। ফলে বছরখানেক ধরে বালির বস্তা নদীর মধ্যেই পড়ে ছিল। এদিকে ধসে গিয়ে বাঁধের অনেকটা অংশ বসে গিয়েছে। সেই বসে যাওয়া অংশ বালির বস্তা দিয়ে উচু করার চেষ্টা চলছে। মঙ্গলবারের পর বুধবার আরও দ্বিগুণ শ্রমিক কাজে লাগানো হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা কাজ চলছে।  


    সেচদপ্তরের তরফে মঙ্গলবার ডিজাইন অফিসের টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। বিশেষজ্ঞরা এই দুর্ঘটনার জন্য আত্রেয়ীর গতিপথ পরিবর্তনকে ব্যাখ্যা করেছেন। তাই বাঁধের আগে বালির বস্তার স্তুপকেও গতিপথ পরিবর্তনের একটা কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে ইঞ্জিনিয়াররা জানিয়েছেন, ওই বাঁধের পার নতুন করে ডিজাইন করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে আরও অর্থ বরাদ্দ হবে। আগেই ৩২ কোটি টাকা খরচ করে এই বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। একবছরের মধ্যে ফের নতুন করে খরচ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারা। 


    মঙ্গলবার এসে রাজ্যের সেন্ট্রাল ডিজাইন অফিসের ডেপুটি ডিরেক্টর পিনাকী চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, বাঁধের মূল অংশ অক্ষত রয়েছে। ডিজাইনের ভুল হয়নি। নদীর স্রোত নিজের মত চলে, তাই ডানদিক দিয়ে বয়ে যাওয়ার ফলেই সমস্যাটি হয়েছে। আমরা এই অংশের কাজের জন্য ডিজাইন করছি। 


    অন্যদিকে বুধবার জেলা সেচদপ্তরের এগজিকিউটিভ মৃত্যুঞ্জয় কুমার বলেন,


    বর্তমানে অনেকটাই কাজ হয়েছে। সেন্ট্রাল ডিজাইন টিম যেভাবে নির্দেশ দেবেন, সেভাবেই কাজ হবে। 


    রবিবার রাত থেকেই আত্রেয়ীর ড্যামের পশ্চিম অংশে বাঁধ বরাবর ধস নামে। রাতের মধ্যেই স্লুইসগেটের পাশে উপরের একাংশ কংক্রিট ভেঙে পড়ে। নদীর স্রোত স্লুইসগেটের পাশ দিয়ে বাঁধের সিড়ি ভেঙে জল বয়ে যাচ্ছে। তাই ওই জায়গা দিয়ে জলের স্রোতকে আটকানোর চেষ্টা চলছে। বর্তমানে পশ্চিম অংশে জল আটকে পূর্বদিক দিয়ে জল বয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন ইঞ্জিনিয়াররা।


    নির্মিত হওয়ার একবছরের মধ্যে বাঁধের এমন দশায় ফুঁসছেন বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দা অমিত ঘোষ বলেন, শুধুমাত্র বাঁধের মূল অংশের কাজটা করেছে। কাজের পর বালির বস্তা সরাইনি। এমনকি ড্যামের দু’পাশেও ভালো করে কাজ করেনি। দায়সারা কাজের জন্যেই এই দশা। আবার নতুন করে সরকারের অর্থ খরচ হবে। 
  • Link to this news (বর্তমান)