• ইংলিশবাজারে হাঁসুয়ার কোপে ছেলেকে খুন, অভিযুক্ত বাবা
    বর্তমান | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ: মাত্র দু’কাঠা জমি। আর তা নিয়ে বাবা-ছেলের মধ্যে বিবাদ। অভিযোগ, মিটমাট না হওয়ায় হাঁসুয়ার কোপে ছেলেকে খুন করেছে বাবা। ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করায় প্রাণ হারায় ছেলে। ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের ইংলিশবাজার থানার শোভানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের মাদিয়াতে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম শেখ সাকিরুল (৩০)। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত শেখ তাবরেজ (৫০) বাড়িঘর ছেড়ে চম্পট দিয়েছে। অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিস। সামান্য বিবাদ যে এতবড় ঘটনায় পরিণত হবে, তা ভাবতেই পারছেন না স্থানীয়রা। মালদহের পুলিস সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। 


    মৃতের পরিবার ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত শেখ তাবরেজের চার ছেলে। সম্প্রতি তাবরেজ তার জমিজমা ভাগাভাগি করে। চার ছেলের মধ্যে তাবরেজ বড় এবং মেজো ছেলেকে জমি ভাগ করে দেয়। কিন্তু তৃতীয় ছেলে শেখ সাকিরুল ও ছোট ছেলেকে জমি ও সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করে বলে অভিযোগ। এনিয়ে বাবা-ছেলেদের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরেই ঝামেলা চলছিল। মঙ্গলবার রাত দশ’টা নাগাদ আবারও জমির ভাগাভাগি নিয়ে বাবা ছেলের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। অভিযোগ, সেই সময় হাঁসুয়া দিয়ে ছেলে শেখ সাকিরুলের মাথায় আঘাত করে শেখ তাবরেজ। ঘটনাস্থলেই রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ছেলে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। 


    মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাতে গুরুতর জখম অবস্থায় সাকিরুলকে মেল সার্জিক্যাল বিভাগে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসারত অবস্থায় এদিন ভোরে তার মৃত্যু হয় বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। 


    মৃতের ভাই আতিকুল রহমান বুধবার বলেন, দাদা ভিনরাজ্যে মোবাইল টাওয়ারে কাজ করত। ও বাড়িতে এসেছিল। তারপর থেকে মাত্র দু'কাঠা জমি নিয়ে বাবার সঙ্গে ওর বিবাদ চলছিল। তখনই বাবা হাঁসুয়া দিয়ে ওর মাথায় আঘাত করে। পরে মেডিক্যাল কলেজে দাদার মৃত্যু হয়। 


    এদিকে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার পর থেকে পলাতক অভিযুক্ত বাবা শেখ তাবরেজ। যে দু কাঠা জমি নিয়ে বাবা ছেলেকে খুন করেছে সেই জমিটির মালদহ মানিকচক রাজ্য সড়কের ধারে। বুধবার মালদহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মৃতের ময়নাতদন্ত করা হয়। এদিন মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে মৃত যুবকের আরএক ভাই শেখ দুলাল বলেন, দাদা এদিন বাড়িতেই ছিল। বাবা রাতে নেশা করে বাড়ি ফেরে দাদাকে গালিগালাজ করে। বাবা আমার দাদাকে বাড়ির বাইরে আসতে বলে। দাদা বাড়ির বাইরে আসতেই বাবা অস্ত্র দিয়ে ওকে আঘাত করে।  


    পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত শেখ সাকিরুলের পরিবারে স্ত্রী ও তিন সন্তান রয়েছে। তিন সন্তানের মধ্যে দু'জন ছেলে ও একটি মেয়ে। স্বামীকে হারিয়ে অথৈজলে পড়েছেন বধূ। পাড়া প্রতিবেশীরাও দোষীর শাস্তির দাবি করেছেন। পুলিসও হন্যে হয়ে অভিযুক্তকে খুঁজছে। দ্রুত তাকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিস।


    (মৃত শেখ সাকিরুল। - নিজস্ব চিত্র।)
  • Link to this news (বর্তমান)