জলপাইগুড়িতে মোবাইল থেকে গ্যাস সিলিন্ডার চুরির ওস্তাদ পুলিসের জালে
বর্তমান | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: টোটোচালকের বেশে দিনভর রেইকি। তারপর সুযোগ বুঝে ফাঁকাবাড়িতে হানা দিয়ে সর্বস্ব হাতিয়ে নেওয়া। তবে মূল টার্গেট থাকত দামি মোবাইল ও রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার। পুলিস সূত্রে খবর, বাইক চুরি চক্রেও নাম লেখানো ছিল তার। কোন এলাকায় কোন বাইক ‘অরক্ষিত’ অবস্থায় দীর্ঘক্ষণ রয়েছে, টোটো নিয়ে সেটাই ‘রেইকি’ করে গ্যাংয়ের কাছে খবর পৌঁছে দেওয়া ছিল তার কাজ। বিনিময়ে মিলত মোটা কমিশন। এভাবে হাতে যে টাকা আসত তা দিয়েই জোগাড় হতো ব্রাউন সুগার। যখন নেশার টাকা জোগাড়ে টান পড়ত, তখনই বেড়ে যেত চুরির ঘটনা।
দীর্ঘদিন ধরে জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানার পুলিস তাকে খুঁজছিল। বেশ কয়েকবার তাকে ধরতে ওত পাতে পুলিস। কিন্তু বারবারই নাগালে এসেও ফস্কে যাচ্ছিল সে। তবে শেষরক্ষা হল না। বাসিন্দারাই তাকে আটক করে তুলে দিলেন পুলিসের হাতে। সাগর রায় নামে জলপাইগুড়ির পান্ডাপাড়ার বাসিন্দা ওই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালি থানার পুলিস। কোতোয়ালি থানার আইসি সঞ্জয় দত্ত বলেন, ওই যুবক দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন এলাকায় চুরি করত। এলাকার মানুষ ধরে আমাদের হাতে তুলে দিয়েছে।
পুলিস সূত্রে খবর, শহরে প্রায়ই বাড়ি থেকে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার চুরি যাচ্ছিল। কোনও বাড়ির সিঁড়ির তলায় রাখা সিলিন্ডার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে গায়েব। কোথাও আবার একেবারে হেঁশেল থেকে গ্যাস সিলিন্ডার উধাও! টোটোচালকের বেশে দিনভর শহরে রেইকি করে বেড়ানো সাগরের কাজ। তারপর কখনও সুপারি পাড়তে আসার নাম করে কোনও বাড়িতে ঢুকে মোবাইল হাতিয়ে নিয়ে নিমেষে বেপাত্তা হয়ে যাওয়া, কখনও আবার গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে পগারপার হয়ে যাওয়া তার কাছে ‘জলভাত’। পুলিসের দাবি, ধৃত ওই যুবক জেরায় শহরের বিভিন্ন বাড়ি থেকে গ্যাস সিলিন্ডার চুরির কথা স্বীকার করেছে। চুরির পর যাদের কাছে গ্যাস সিলিন্ডারগুলি সে বিক্রি করত, ধৃত ওই যুবককে নিয়ে সেসবের কয়েকটি ডেরায় হানা দেওয়া হয়েছে। তদন্ত চলছে।
মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির সেনপাড়ায় পরপর দু’টি বাড়িতে মোবাইল চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে যায় সাগর রায় নামে বছর ছাব্বিশের ওই টোটোচালক। পুলিসের দাবি, চুরির মতলব নিয়ে কোনও বাড়িতে ঢোকার সময় কিংবা মোবাইল হাতিয়ে বেরিয়ে আসার সময় তার ‘বডি ল্যাঙ্গুয়েজ’ থাকত একেবারে স্বাভাবিক। ফলে তাকে দেখে সেভাবে সন্দেহ হতো না এলাকার লোকজনের।