• কেন্দ্র প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিচ্যুত হয়, আমরা কথা রাখি: মমতা
    বর্তমান | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বুধবার পেশ হল ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। যা সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কল্যাণে মাইলস্টোন বলে চিহ্নিত করেছে রাজ্য সরকার। এই বাজেটের সূত্র ধরে বাংলা কীভাবে এগিয়েছে, তা সুস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, উন্নতির সেতুবন্ধন এই বাজেটে। বাজেটে কর্মসংস্থানকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। লক্ষ্য আরও বেশি কর্মসংস্থান।


    এবছরের ১ ফেব্রুয়ারি সংসদে বাজেট পেশ করেছে কেন্দ্রের সরকার। আর ১২ তারিখ বিধানসভায় রাজ্য বাজেট পেশ করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। বাজেটের পর সাংবাদিক বৈঠকে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে নিশানা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১০০ দিনের কাজ, আবাস, গ্রাম সড়ক যোজনা সহ একাধিক প্রকল্পে দীর্ঘদিন ধরে কোনও টাকা বাংলাকে কেন্দ্র দিচ্ছে না বলে বারবার অভিযোগ উঠছে। আর্থিক প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও বাংলা যেভাবে উন্নয়নের মানচিত্রে এগিয়ে চলেছে, তা তথ্য ও পরিসংখ্যান দিয়ে বক্তব্য পেশ করেছেন মমতা।  তিনি বলেছেন, কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না। তার ওপরে সিপিএম সরকারের করে যাওয়া ঋণের বোঝা টানতে হচ্ছে। প্রতি বছর ৮০ হাজার কোটি টাকা ঋণ শোধ করতে হচ্ছে। তারমধ্যেই সীমিত ক্ষমতার মধ্যে বাংলা যা করছে, তা গোটা বিশ্ব বলছে। আগামীদিন আরও বলবে। বিজেপিকে বিঁধে মমতার তোপ, নির্বাচন এলে কেন্দ্রের বাজেট একরকম কথা বলে। কিছু প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু নির্বাচনের পর প্রতিশ্রুতি থাকে না। প্রতিশ্রুতি থেকে বিচ্যুত হয়। কিন্তু আমরা তা করি না। আমাদের বাজেটে নিজস্ব ফান্ড থেকে সকলের জন্য এমনভাবে করা হয়েছে, যাতে কারও কাছে হাত পাততে না হয়। জন্ম থেকে মৃত্যু, জীবনের প্রতিটি স্তরের জন্য ৯৪টি প্রকল্প রয়েছে।


    নারী, শিশু, কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, যুব, পড়ুয়াদের জন্য বাজেটের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেভাবে উন্নয়নের পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে, তা বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, ৬১কোটি কর্মদিবস তৈরি করেছি। ১২ লক্ষ বাংলার বাড়ি তৈরির প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া হয়েছে। বাকিটা জুন মাসের মধ্যে দেওয়া হবে। বাকি ১৬ লক্ষ মানুষের বাড়ির প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়ার পরেও চলবে তৃতীয় পর্যায়ের আবেদন গ্রহণ। পুরো বাজেটের অর্ধেক বরাদ্দ নারী ও শিশুদের জন্য রাখা হয়েছে।


    এতসবের পরেও সংসদে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বাংলার বিরুদ্ধে সরব হন। বাংলার সরকারের প্রবল সমালোচনা করেন তিনি। যা নিয়ে পাল্টা জবাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, নির্মলাদেবী বাংলাকে নিয়ে কম ভাবুন। আপনারা আগে নিজেদের দুর্নীতি সামলান। উজালা গ্যাসের ভবিষ্যৎই বা কী! একইসঙ্গে প্রকল্পের নাম বাংলায় করা নিয়েও কেন্দ্রকে খোঁচা দিয়েছেন মমতা। বলেছেন, বাংলা ভাষায় নামকরণ করে জলস্বপ্ন প্রকল্প করা হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্র কেন চাপিয়ে দেবে। কেন তাদের মতো নাম করতে হবে! 


    সম্প্রতি কুম্ভমেলায় পদপিষ্ট হয়ে প্রাণহানির যে ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়েও উত্তপ্রদেশের বিজেপি সরকারকে দুষেছেন মমতা। সঠিক পরিকল্পনা করে মেলার আয়োজন করা উচিতি ছিল বলে মনে করেন তিনি। এমনকী কোনও মৃত্যুর শংসাপত্র না দিয়ে চিরকুটে নাম লিখে যেভাবে দেহ বাংলায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে, তা নিয়েও ক্ষুব্ধ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি উল্লেখ করেছেন, একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে লাখ লাখ জুতো গাড়িতে তোলা হচ্ছে। করোনার মতো এবারও দেহ জলে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে কি না, জানা নেই!
  • Link to this news (বর্তমান)