• ‘কলকাতা পুলিসে থাকার যোগ্যতাই নেই’,  গল্ফগ্রিন থানার তদন্তের ধরন দেখে ক্ষুব্ধ বিচারপতি,  আইও-কে তলব
    বর্তমান | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: এবার কলকাতা পুলিসের তদন্তের গতিপ্রকৃতি দেখে বেজায় ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের পর্যবেক্ষণ, ‘এই সব পুলিস অফিসারের কলকাতা পুলিসে থাকার যোগ্যতাই নেই। এঁদের জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া উচিত।’ 


    কলকাতা পুলিসের অন্তর্গত গল্ফগ্রিন থানায় এক যুবককে মারধরের মামলা রুজু হয়। সেই ঘটনার তদন্তে ত্রুটি ধরেন বিচারপতি নিজেই। মামলার বয়ান সূত্রে জানা গিয়েছে, এক তরুণ নিজের বাড়ির সামনেই পোষ্যকে নিয়ে ঘুরছিলেন। অভিযোগ, সেই সময়েই স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে তাঁর বচসা শুরু হয়। বচসা গড়ায় হাতাহাতিতে। অভিযোগ, ঝামেলা থামাতে গিয়ে তরুণের মা-ও আক্রান্ত হন। এরপর গুরুতর আহত অবস্থায় তরুণকে প্রথমে একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ায় অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়। যুবকের চিকিৎসা করে দ্বিতীয় হাসপাতাল পরিবারকে জানিয়ে দেয়, ওই তরুণ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে গিয়েছেন। তাঁর পক্ষে আর স্বাভাবিক কাজকর্ম করা সম্ভব নয়।


    এদিকে, থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ায় পুলিস কয়েকজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু পরে তাঁরা নিম্ন আদালত থেকে জামিন পেয়ে যান। তরুণের পরিবারের অভিযোগ, পুলিস সঠিকভাবে তদন্ত না করার কারণেই অভিযুক্তেরা জামিন পেয়ে গিয়েছেন। তাঁদের আরও অভিযোগ, পুলিস দ্বিতীয় হাসপাতাল থেকে কোনও নথিই সংগ্রহ করেনি। দ্বিতীয় হাসপাতালের নথি নিম্ন আদালতে জমা না পড়ার কারণেই অভিযুক্তদের জামিন পেতে সুবিধা হয়েছে বলে দাবি পরিবারের। 


    এরপর পুলিসের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় যুবকের পরিবার। বুধবার সেই মামলার শুনানিতে পুলিসের ভূমিকায় রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিচারপতি ঘোষ। দ্বিতীয় হাসপাতালের মেডিক্যাল রিপোর্ট কেন নিম্ন আদালতে পেশ করা হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। রাজ্যকে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘পুলিস কি সব জেনে বুঝেই এমন কাজ করেছে? দ্বিতীয় হাসপাতালের মেডিক্যাল রিপোর্ট পেশ না হলে বলতেই হবে, তদন্ত ঠিকমতো হয়নি।’ বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘তদন্ত করার ধরন দেখে মনে হচ্ছে ওই পুলিস কর্মীদের কলকাতা পুলিসে থাকার যোগ্যতা নেই। এমন অফিসারদের জেলায় পাঠানো উচিত।’ 


    এরপরই তাঁর নির্দেশে বিচারপতি জানিয়ে দেন, তদন্তকারী অফিসারকে কেস ডায়েরি নিয়ে আদালতে সশরীরে হাজির হতে হবে। কোন পুলিস কর্মী নিম্ন আদালতে চিকিৎসা সংক্রান্ত নথি জমা দিয়েছেন, তাও জানাতে হবে। অন্যথায় তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিচারপতি ঘোষ। শুক্রবার পরবর্তী শুনানি।
  • Link to this news (বর্তমান)