দু’টি কিডনিই অকেজো, কনস্টেবলকে নিজের জেলায় বদলি করল লালবাজার
বর্তমান | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সুজিত ভৌমিক, কলকাতা: দুটো কিডনিই অকেজো হয়ে পড়েছে কলকাতা পুলিসের কনস্টেবল মনোয়ার আনসারির! অসুস্থ পুলিসকর্মী বাড়ির কাছে বদলি চেয়ে আবেদন করেছিলেন। মানবিক কারণে সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে লালবাজার ওই কনস্টেবলকে নিজের জেলা মালদহে ডেপুটেশনে বদলি করেছে।
২০১৭ সালে কলকাতা পুলিসের কনস্টেবল পদে যোগ দেন মনোয়ার। ভাঙড় ডিভিশনের পোলেরহাট থানায় কর্মরত ছিলেন বছর ঊনত্রিশের ওই কনস্টেবল। পোলেরহাট থানার হাতিশালা ফাঁড়িতে মূলত ডিউটি করতেন তিনি। হঠাৎ করেই একদিন অসুস্থ হয়ে পড়েন মনোয়ার। চিকিৎসক জানান, দুটো কিডনি বিকল হয়ে পড়েছে তাঁর। নিয়মিত ডায়ালিসিস করাতে হবে। খাওয়া-দাওয়ার ক্ষেত্রে হাজারো বিধিনিষেধ। ফলে বাড়ি থেকে সাড়ে তিনশো কিলোমিটার দূরে চাকরি করতে এসে সমস্যায় পড়েন ওই পুলিসকর্মী।
আদতে মালদহের রতুয়ার ছেলে মনোয়ার বাধ্য হয়ে কলকাতা পুলিসের কর্তাদের কাছে নিজের জেলায় বদলির আবেদন করেছিলেন। সম্প্রতি সেই আবেদনে সাড়া দিয়েছে রাজ্য সরকার। তারপরই ওই পুলিসকর্মীকে রাজ্য পুলিসের অধীনস্থ মালদহ জেলার পুলিস লাইনে ডেপুটেশনে বদলি করেছে লালবাজার। মানবিক কারণেই এই নজিরবিহীন উদ্যোগ বলে স্বীকার করেছেন কলকাতা পুলিসের এক কর্তা। সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিস থেকে রিলিজ নেওয়ার পর মানোয়ার ২৮ জানুয়ারি মালদহ জেলার পুলিস লাইনে যোগ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, দেড়শো বছরের ইতিহাসে এমন বদলি কার্যত নজিরবিহীন বলে স্বীকার করছে কলকাতা পুলিসের একাংশ। অতীতে পুলিসকর্মীদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ওঠায়, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে রাজ্য পুলিসে ডেপুটেশনে বদলির নজির রয়েছে। কিন্তু নিচুতলার একজন পুলিস কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে বাড়ির কাছে ব্যতিক্রমী এমন বদলি আক্ষরিক অর্থেই কলকাতা পুলিসে নতুন দিগন্তের সূচনা করল।
মনোয়ারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কলকাতা ও রাজ্য পুলিসের শীর্ষকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘স্যাররা না থাকলে আমার এই বদলি হতো না।’ তবে স্বাস্থ্য ভবনের ভূমিকায় হতাশ তিনি। কারণ ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট পাননি এখনও। ডোনার থাকলেও অসুস্থ এই পুলিসকর্মীর কিডনি বদল আটকে গিয়েছে!’