এই সময় ভাঙড় ও কলকাতা: ফের খবরের শিরোনামে ভোজেরহাটের ভাটিপোতা গ্রাম। কয়েকদিন আগে এই গ্রামেই ভরসন্ধ্যায় এক যুবককে গুলি করে পালিয়ে গিয়েছিল দুই দুষ্কৃতী। আর এ বার এলাকায় শওকত মোল্লার ঘনিষ্ঠ এক ব্যবসায়ীকে কোপাল অজ্ঞাতপরিচয় এক দুষ্কৃতী।
অভিযোগ, ওই ব্যবসায়ী যখন ভোরের বেলা নিজের ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন তখন এক যুবক ঘরে ঢুকে তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার পুলিশ। জখম ব্যবসায়ী ইএম বাইপাস সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আহত ব্যবসায়ীর নাম মালেক মোল্লা। তিনি নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত। মালেক মোল্লা এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত। তিনি ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লার ঘনিষ্ঠ। অন্যান্য দিনের মতো এ দিনও ভোরে মালেক ও তাঁর স্ত্রী ঘুম থেকে ওঠেন। প্রাতঃকৃত্য সেরে মালেক ফের নিজের ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন।
অভিযোগ, সেই সময় এক যুবক বাইকে চেপে মালেকের বাড়িতে এসে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। কিছুক্ষণ পরে ঘরের ভেতর থেকে চিৎকার করে ওঠেন মালেক। তাঁর পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনরা ছুটে যেতেই ঘর থেকে এক দুষ্কৃতী পালিয়ে যায়। ঘরের ভিতর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিলেন মালেক। তার মাথায় ও হাতে ধারালো অস্ত্রের কোপ রয়েছে।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি মালেকের এক মেয়ের বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পরেই তাঁর মেয়ে অন্য এক যুবকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়ে ফের বিয়ে করে। এ দিনের হামলার সঙ্গে সেই ঘটনার যোগ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এ বিষয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা ভোজেরহাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আক্রাম মোল্লা বলেন, ‘মালেক মোল্লা আমাদের দলের সক্রিয় কর্মী। খুব পরিচিত কোনও লোক না হলে এই ঘটনা ঘটতে পারে না।’
অন্যদিকে, এ দিনই হাইকোর্টে সাময়িক স্বস্তি পেলেন শওকত বিরোধী তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। ভাঙড়ের বিজয়গঞ্জ বাজারে মনিরুল মোল্লাকে গুলি করে খুনের চেষ্টার মামলা ওঠে বুধবার। মনিরুল এক সময়ে ছিলেন আইএসএফে, এখন তিনি তৃণমূলে আরাবুলের বিরোধী গোষ্ঠীর এক নেতার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। মনিরুলকে খুনের চেষ্টার মামলায় আরাবুলকে গ্রেপ্তার করা হলেও এখন তিনি জামিনে মুক্ত। এ দিন হাইকোর্টে রিপোর্ট দিয়ে পুলিশ ওই মামলায় চার্জশিট দেওয়ার কথা জানায়। হাইকোর্টে মনিরুল মামলা করে আরাবুলের জামিন খারিজ করার ও নিজের পরিবারের জন্য নিরাপত্তার আবেদন জানান।
বুধবার সেই মামলায় আরাবুলের জামিন খারিজের জন্য অভিযোগকারীকে নিম্ন আদালতে আবেদন করতে পরামর্শ দেয় হাইকোর্ট। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের বক্তব্য, নির্যাতিতকে এখনও হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
তাই তাঁকে উইটনেস প্রোটেকশন আইনে নিরাপত্তা দিতে হবে। ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটের আগে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ভাঙড়ে পাঁচ জন নিহত হন। সেই সময়ে আইএসএফে থাকা মনিরুলকে লক্ষ্য করে আরাবুলের লোকেরা গুলি চালায় বলে অভিযোগ ওঠে।