• অপরাধপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে জোর সিসি ক্যামেরার নজরদারিতে
    আনন্দবাজার | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • শহরের অপরাধপ্রবণ এলাকা বা জ়োন চিহ্নিত করার নির্দেশ দিলেন কলকাতা পুলিশের নগরপাল। শুধু চিহ্নিত করাই নয়, সেই সব জায়গায় সিসি ক্যামেরার নজরদারি যাতে হয়, তা-ও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। সূত্রের খবর, গত সপ্তাহে লালবাজারের গুন্ডা দমন শাখার গোয়েন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করেন কলকাতা পুলিশের নগরপাল মনোজ বর্মা। সেখানেই তিনি ওই নির্দেশ দিয়েছেন বলে সূত্রের দাবি। গত কয়েক মাসে শহরে বেশ কয়েকটি অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে রয়েছে নারকেলডাঙায় প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে কোটি টাকা ডাকাতির ঘটনা। তার কয়েক দিন আগেই ওই একই কায়দায় কড়েয়ার একটি শপিং মলের কাছে কয়েক লক্ষ টাকা লুটের ঘটনা ঘটেছিল। এ ছাড়াও মাসকয়েক আগে কসবায় স্থানীয় শাসকদলের প্রভাবশালী পুরপ্রতিনিধি সুশান্ত ঘোষের উপরে দুষ্কৃতীদের হামলা একাধিক প্রশ্নের মুখে ফেলেছিল শহরের নিরাপত্তাকে।

    সূত্রের দাবি, ওই ঘটনাগুলিতে যেমন ভিন্‌ রাজ্যের দুষ্কৃতীদের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে, তেমনই তদন্তে উঠে এসেছে যে, দুষ্কৃতীরা ভিন্‌ রাজ্য থেকে শহরে এসে ঘাঁটি গেড়ে, রেকি করে অপরাধ সংঘটিত করছে। নারকেলডাঙা এবং কসবার ঘটনায় ভাড়া করা বাড়িতে এসে আশ্রয় নিয়েছিল অভিযুক্তেরা। পরে অবশ্য তাদের ধরতে সক্ষম হন গোয়েন্দারা। এক পুলিশকর্তা জানান, নগরপাল অপরাধের কিনারা নিয়ে সন্তুষ্ট। কিন্তু যে ভাবে শহরে এসে বিনা বাধায় অপরাধ করছে দুষ্কৃতীরা, যার কোনও তথ্য গোয়েন্দারা আগেভাগে পাচ্ছেন না— তা নিয়ে তিনি অসন্তুষ্ট। তাই তাঁদের ‘সোর্স নেটওয়ার্ক’ আরও বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন নগরপাল। যাতে শহরে দুষ্কৃতীদের আনাগোনার খবর গোয়েন্দারা আগেভাগেই পেতে পারেন। উল্লেখ্য, শহরে অপরাধের উদ্দেশে উত্তরপ্রদেশের দু’টি দুষ্কৃতী দলকে কয়েক দিনের ব্যবধানে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ। একই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে অস্ত্রশস্ত্রও। ওই আগাম গ্রেফতারের ফলে শহরে অপরাধ রোখা গিয়েছে বলে দাবি করেছিলেন পুলিশকর্তারা।

    লালবাজার সূত্রের খবর, নারকেলডাঙার ঘটনার পরে তদন্তে নেমে কিছুটা ধাক্কা খেতে হয় তদন্তকারীদের। কারণ, ঘটনাস্থলে সিসি ক্যামেরার নজরদারি ছিল না। পরে অবশ্য গুন্ডা দমন শাখার তদন্তকারীরা কয়েক জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে টাকা উদ্ধার করলেও নগরপাল চাইছেন, শহরের সব অপরাধপ্রবণ এলাকায় সিসি ক্যামেরার নজরদারি বাড়াতে। এ জন্যই গুন্ডা দমন শাখাকে অপরাধপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। সূত্রের দাবি, যে কাজ গুন্ডা দমন শাখার গোয়েন্দারা ইতিমধ্যেই শুরু করেছেন। ওই তালিকা তৈরি হওয়ার পরেই সেই সমস্ত জায়গায় সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজ শুরু হবে।

    উল্লেখ্য, শহরের দুষ্কৃতী দমনের কাজ করে থাকে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের গুন্ডা দমন শাখা। দুষ্কৃতী দমন করা অথবা অস্ত্র উদ্ধার— সব কিছুই করে থাকে এই শাখা। কিন্তু অভিযোগ উঠছে, সেই কাজে ঢিলেমির ফলেই শহরের বুকে একের পর এক অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। সেই কারণেই নগরপাল গুন্ডা দমন শাখার সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কাজের দিশা ঠিক করে দিয়েছেন বলে মনে করছেন লালবাজারের কর্তাদের একাংশ।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)