কেন্দ্রে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সঙ্গী হয়ে লড়লেও এ রাজ্যে একাই লড়বে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর বৃহস্পতিবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও স্পষ্ট করে দিলেন, বাংলায় ‘একলা চলো’ নীতিতেই থাকবে জোড়াফুল।
বৃহস্পতিবার নিজের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারের অন্তর্গত সাতগাছিয়ায় একটি সেবাশ্রয় ক্যাম্পে গিয়েছিলেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ভোটে একা লড়া নিয়ে তিনি বলেন, ‘২০২৬ আসতে এখনও এক বছর বাকি, তবু ২৬-এর ভোটে তৃণমূল একা লড়বে কি না, সে জবাব দিদি অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিয়েই দিয়েছেন। আর এতে আশ্চর্যের তো কিছু নেই। একুশেও আমরা একা লড়েছি। ২০১৪, ২০১৬ ২০১৯, ২০২৪ সালেও অন্যথা হয়নি। একা লড়ে আমরা দারুণ ফল করেছি। তো একাই লড়ব। বিজেপি যাই বলুক, রেজাল্ট কী হয়েছে সবাই দেখেছে।’
সাম্প্রতিক এক রিপোর্টে ভোটের বিশ্লেষণে দাবি করা হয়, কংগ্রেস ও তৃণমূল একসঙ্গে লড়লে কেন্দ্রে বিজেপিকে হারানো সম্ভব হতো। এই প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, 'এটা সম্পূর্ণটাই অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। আসল কথা হচ্ছে, মানুষ কী চায়। মানুষের সমর্থন পেলে একা লড়ে হোক বা জোট বেঁধে, তাতে প্রভাব পড়ে না। হয়তো দুই থেকে চার আসনের এ দিক-ও দিক হতো। তার বেশি নয়।'
এ প্রসঙ্গেই দিল্লিতে কেজরিওয়ালের হার নিয়েও ব্যাখ্যা দেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক। তাঁর কথায়, 'বিজেপি যে মিথ্যে ন্যারেটিভ ছড়িয়েছিল, তা খণ্ডন করতে পারেনি আপ। তারা জনগণকে বোঝাতে পারেনি যে, একটা নির্বাচিত সরকারকে কাজ করতে দেয়নি বিজেপি।'
এ বিষয়ে বাংলার উদাহরণ তুলে ধরে অভিষেক বলেন, ‘দিল্লির মতো একই জিনিস বাংলাতেও করেছিল বিজেপি। কেন্দ্রের নেতারা এখানে এসে সাধারণ মানুষকে বলেছিল, ওরা টাকা দিয়ে দিয়েছে। তৃণমূল নাকি টাকা আটকে রেখেছে। আমরা ৫০ লক্ষ লোকের কাছে গিয়ে সত্যিটা বুঝিয়েছি। চিঠি লিখে দিল্লি গিয়েও টাকার জন্য দরবার করেছি। আমরা শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানালে ওরা তা দিতে পারেনি। ফলে মানুষ সত্যিটা বুঝে গিয়েছে। ’
একইসঙ্গে ভুয়ো ভোটার প্রসঙ্গে কমিশনের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনাও শোনা যায় তাঁর মুখে। তিনি বলেন, ‘ওদের কথা যত না বলা যায়, ততই ভালো।’
এ দিনের বক্তব্যে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধেও আক্রমণ শানান অভিষেক। ২৬-এর পর বিজেপির লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে ৩ হাজার টাকা দেওয়ার দাবি শুনে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধ করে দেবে বলেছিল, তারাই এখন ৩ হাজার টাকা দেবে বলছে। এটাই তো মা-মাটি মানুষের সাফল্য। কিন্তু যে নেত্রী বলেছিলেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধ করে দেবেন, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।’