• শীত শেষের বৃষ্টির প্রহর গুনছে ডুয়ার্সের চা বাগান
    এই সময় | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়, মালবাজার: কচি সবুজ পাতার উপর কয়েক পশলা বৃষ্টি। সেটাই আশীর্বাদ হয়ে নেমে আসতে পারে ডুয়ার্সের চা বলয়ে। মেঘলা আকাশ দেখে সেই বৃষ্টিরই অপেক্ষায় উত্তরবঙ্গের চা শিল্পের কর্ণধাররা। চলতি সপ্তাহের সোমবার থেকে উত্তরের সব চা বাগানে টি বোর্ডের নির্দেশে একযোগে চা পাতা তোলার কাজ শুরু করে দেওয়া হয়েছে।

    শীত শেষের এই প্রথম মরশুমের চা–কেই ‘ফার্স্ট ফ্লাশ’ বলে ডাকা হয়। এই সময়ে সবুজ চা পাতার স্বাদ বাড়িয়ে তুলতে মেঘলা আকাশ থেকে নেমে আসা বৃষ্টি অমূল্য আশীর্বাদ হয়ে উঠতে পারে। ক’দিন ধরে রোদের দেখা নেই।

    দিনের বেলাতেও ভালো শীত, রাতে জাঁকিয়ে ঠান্ডা। মাঝ ফেব্রুয়ারিতে শীতের এই পুনরুজ্জীবন অবাক করছে অনেককেই। তারই মধ্যে মেঘাচ্ছন্ন আকাশ থেকে সামান্য বৃষ্টি মিললেই কাজের কাজ হবে বলেই মনে করছে চা শিল্প মহল। সেই সম্ভাবনার দিকেই চা শিল্পের পরিচালকরা তাকিয়ে রয়েছেন।

    বৃষ্টির সম্ভাবনা যে প্রবল ভাবে রয়েছে, সে কথা আবহাওয়া দপ্তর আগেই জানিয়ে রেখেছে। সিকিমের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘চলতি সপ্তাহ জুড়ে রোদের দেখা মিলবে না। বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।’ তবে শুধু বৃষ্টিতেই চায়ের কাহিনি শেষ হয় না। বৃষ্টির পরে চাই মেঘমুক্ত আকাশ।

    এই দুয়ের যুগলবন্দিতে চা তার মহিমা খুঁজে পায়। এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের। বৃষ্টির পর ঝকঝকে রোদ, সঙ্গে সুনীল আকাশ ফার্স্ট ফ্ল্যাশ চায়ের জন্যে আদর্শ। বৃষ্টি না হয়ে যদি আবার এই কুয়াশাচ্ছন্ন মেঘলা আকাশ থেকে যায়, তা হলে কিন্তু সমস্যা। এতে চা পাতার গুণগত মান ভালো হবে না, তেমনই নানা রোগপোকার আক্রমণের আশঙ্কা বাড়বে।

    ডুয়ার্সের মেটেলি ব্লকের ইনডং চা বাগানের সিনিয়র ম্যানেজার রজত দেব আড়াই দশক ধরে চা বাগান পরিচালনার কাজ করছেন। তিনি বলেন, ‘নতুন সবুজ পাতা তোলার এই সময়ে বৃষ্টি হলে সেটাই হবে সবথেকে ভালো খবর। কিন্তু মেঘলা আকাশ দীর্ঘদিন ধরে থাকলে আবার নানা সমস্যা বাড়বে।’

    শীতের সময়ে পাইপ দিয়ে জল বয়ে এনে ফোয়ারার মতো স্প্রে করে ছেটাতে হয় চা বাগানে। সেচের এই কাজ যেমন অপরিহার্য, তেমনই বেশ ব্যয়বহুল। অল্পবিস্তর বৃষ্টি হলে সেচের খরচ কমে যাবে। তাই শীতের শেষবেলায় একটু বৃষ্টির পথ চেয়ে রয়েছেন চা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষজন। তাঁদের একজন বেতগুড়ি চা বাগানের ম্যানেজার মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, ‘এই সময়ে এক–আধবেলার বৃষ্টিও ভীষণ কার্যকরী হয়ে উঠতে পারে। তাই বৃষ্টি হলে ভালো।’

  • Link to this news (এই সময়)