• কোনারক সূর্য মন্দিরেও মেলে না দেখা, মুর্শিদাবাদে রয়েছে সেই মূর্তি! কোথায় জানুন ...
    আজকাল | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তে হাতেগোনা মাত্র কয়েকটি সূর্য মন্দির রয়েছে। সূর্য দেবতার মন্দিরে তাঁর মূর্তি রয়েছে এমন মন্দিরের সংখ্যা আরও কম। মন্দিরে বেশিরভাগ জায়গায় সূর্যের চিহ্ন বা প্রতীক পূজিত হয়। এমনকী ভারত বিখ্যাত কোনারকের সূর্য মন্দিরেও সূর্য দেবতার কোনও মূর্তি নেই। 

    কয়েক শতাব্দী আগে মুর্শিদাবাদ জেলার নবগ্রাম ব্লকের অমৃতকুন্ড গ্রামে সূর্য দেবতার বিগ্রহ এবং মন্দির প্রতিষ্ঠা হলেও বিস্মৃতির অতলেই থেকে গেছে এই মন্দির। প্রতি বছর মুর্শিদাবাদে হাজারদুয়ারি প্যালেস এবং নবাবদের অন্যান্য নিদর্শন দেখার জন্য হাজার হাজার পর্যটক এলেও তাঁদের বেশিরভাগ, এমনকী জেলার অধিকাংশ মানুষই জানেন না মুর্শিদাবাদে কোথায় রয়েছে সূর্য দেবতার বিগ্রহ এবং তাঁর মন্দির। 

    অমৃতকুন্ড সূর্য মন্দিরের সেবাইত সুমন চ্যাটার্জী বলেন, 'আমাদের পূর্বপুরুষের কাছ থেকে আমরা শুনেছি দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত রাজা বিক্রমাদিত্য এই মন্দিরটি স্থাপন করেছিলেন। বহু বছর আগে তিনি যখন এই এলাকা দিয়ে যাচ্ছিলেন সেই সময় তিনি স্বপ্ন দেখেন গ্রামের 'দেবপুকুরে' সূর্য দেবতার মূর্তি রয়েছে। এরপর দেবতার আদেশে তিনি সেই মূর্তি তুলে এনে গ্রামে সুদৃশ্য পাথরের মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।' তবে সময়ের আঁচড় লেগে বিক্রমাদিত্যের নির্মিত সেই মন্দির এখন আর দেখা যায় না। স্থানীয় মানুষের সহযোগিতায় বছর তিরিশ আগে তৈরি হয়েছে অন্য একটি মন্দির। যেখানে এখনও সূর্য দেবতার নিত্যসেবা করা হয়। সুমন বলেন, 'রাজা বিক্রমাদিত্য এই মন্দিরে সূর্য দেবতার যে মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তার মুখের একটু অংশ বহু বছর আগে ভেঙে গিয়েছে। তাই প্রতি বছর শ্রাবণ মাসের শেষ রবিবার এই মন্দিরে সূর্য দেবতার অভিষেক করে তাঁর প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়।' তিনি জানান, 'এই মন্দিরে সপ্ত অশ্বচালিত রথের উপর আসীন রয়েছেন সূর্য দেবতা। তার সঙ্গে রথের চালক অরুণকে দেখতে পাওয়া যায়। পাশেই রয়েছে মা মাতঙ্গীর একটি মূর্তি।' গ্রামের প্রচলিত ধারণা রয়েছে যেহেতু সূর্যদেব অশ্বচালিত রথের উপর আসীন রয়েছেন, তাই ওই গ্রামে কেউ ঘোড়ায় চড়ে ঢুকতে বা ঘুরতে পারেন না। সুমন বলেন, 'এই ধারণা ভ্রান্ত প্রতিপন্ন করার জন্য অনেকেই ঘোড়ার পিঠে চড়ে গ্রামে ঘোরার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তাঁদের সকলেরই মৃত্যু হয়েছে।' গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, অত্যন্ত প্রাচীন এবং দামি মূল্যবান পাথরে নির্মিত এই মন্দিরের মূর্তি। তাই মন্দির এবং মূর্তির সুরক্ষার জন্য ব্যবস্থা নিক প্রশাসন। এর পাশাপাশি মন্দির সংলগ্ন এলাকাটি যাতে পর্যটনস্থল হিসেবে রাজ্যে পরিচিতি পায়, তার দাবিও রেখেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
  • Link to this news (আজকাল)