অর্ণব আইচ: ভ্যালেন্টাইনস ডে’র তিনদিন আগে প্রতিশ্রুতি দিবস। সেদিনই পরস্পরের কাছে প্রতিশ্রুতি করার ছলেই নাবালিকা কিশোরীকে ঘরের মধ্যে ডেকে মাদকাচ্ছন্ন করে বন্ধুর সঙ্গে মিলে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। পুলিশ জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার বেনিয়াপুকুরে ঘটেছে এই ভয়াবহ ঘটনাটি। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অভিযোগ, কিশোরীর এক বন্ধু ও তার এক সঙ্গী মিলে ফাঁকা ঘরে ওই কিশোরীর উপর যৌন নির্যাতন চালায়। এখানেই তাদের কীর্তি শেষ হয়নি। রীতিমতো ওই গণধর্ষণের অশ্লীল ভিডিও তৈরি করে তারা কিশোরী বান্ধবীকে ব্ল্যাকমেলও করতে থাকে। শেষে কিশোরীটি ঘুরে দাঁড়িয়ে অভিযোগ করতেই ফাঁস হয়ে যায় তাদের জারিজুরি। পূর্ব কলকাতার বেনিয়াপুকুর থানার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয় দু’জন।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত দুই যুবকের নাম মহম্মদ সরফরাজ ও মহম্মদ সইফ। তারা ছোটখাটো কাজ করে। এলাকার বাসিন্দা হওয়ার সুবাদে তাদের সঙ্গে ১৭ বছর বয়সের ওই কিশোরীর পরিচয় ছিল। দাবি, সরফরাজ নাবালিকা কিশোরীর সঙ্গে প্রেমের অভিনয় করতে শুরু করে। গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে গোলাপ দিবস, প্রস্তাব দিবস, চকোলেট দিবস, টেডি দিবস পেরিয়ে আসে তারা। এমনকী, শুক্রবার প্রেমদিবসে সারাদিন ধরে নতুন বন্ধুটির সঙ্গে ঘোরারও পরিকল্পনা করে ওই কিশোরীটি। সে ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেনি তার বন্ধু সরফরাজের আসল উদ্দেশ্য।
অভিযোগ, মঙ্গলবার প্রতিশ্রুতি দিবসে সরফরাজ তার বান্ধবীকে জানায়, তাকে সে নিয়ে যাবে বন্ধুর বাড়িতে। সেখানেই তারা জীবনে একসঙ্গে চলার প্রতিশ্রুতি নেবে। কিশোরীও রাজি হয়ে যায়। সরফরাজ তার বান্ধবীকে নিয়ে যায় বেনিয়াপুকুরের নর্থ রেঞ্জ এলাকায়, তার বন্ধু সইফের বাড়িতে। মঙ্গলবার সইফের বাড়িতে কেউ ছিল না। সেখানেই তাকে মাদক মেশানো ঠান্ডা পানীয় খেতে দেওয়া হয়। কিশোরী অচেতন হয়ে যাওয়ার পর দুই বন্ধু মিলে তাকে গণধর্ষণ করে বলেই অভিযোগ। ধর্ষণের ভিডিও-ও নাকি তুলে রাখা হয় মোবাইলে। বেশ কয়েক ঘণ্টা পর কিশোরীর চেতনা ফিরে এলে সেই ভিডিও দেখিয়ে শুরু হয় ব্ল্যাকমেল।
বুধবার ‘হাগ ডে’-র দিনটিতে হুমকি আর ব্ল্যাকমেলে বিপর্যস্ত হয়ে যায় সে। তার উপর গণধর্ষণের শিকার হয়ে শারীরিক অসুস্থতাও বোধ করতে থাকে নির্যাতিতা। শেষ পর্যন্ত কান্নায় ভেঙে পড়ে অভিভাবকদের কাছে সব কথা জানায়। বেনিয়াপুকুর থানার পুলিশ অভিযোগ পেয়েই মেডিক্যাল পরীক্ষা করে। পকসো আইনে মামলায় গণধর্ষণের মামলা শুরু হয়। তল্লাশি চালিয়ে দু’জনকেই পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তাদের জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।