‘বাবা আমাকে ওরা বাঁচতে দেবে না’, মৃত্যুর আগে শেষ ফোন
বর্তমান | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, বহরমপুর: ‘বাবা আমাকে ওরা বাঁচতে দেবে না। তুমি আমাকে নিয়ে যাও’, শ্বশুরবাড়িতে শারীরিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাবাকে ফোন করে কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলেন পাপিয়া শর্মা (৩০)। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে আনতে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর বাবার। কিন্তু বুধবার রাতেই তাঁর মৃত্যু সংবাদ আসে। বৃহস্পতিবার জলঙ্গির থানায় পাপিয়ার স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি সহ ন’জনের নামে খুনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতের বাবা। ঘটনাটি ঘটেছে জলঙ্গি থানার সাদিখাঁরদিয়ার গ্রামে। যদিও মৃতার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দাবি, গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন পাপিয়া। ঘটনার তদন্তে নেমে মৃতের স্বামী মানিক শর্মাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। জলঙ্গি থানার পুলিস জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৩ বছর আগে বহরমপুর থানার হরিদাসমাটির বাসিন্দা পাপিয়ার সঙ্গে পেশায় কাঠমিস্ত্রি মানিক শর্মার বিয়ে হয়। দম্পতির ১২ বছরের এক ছেলে রয়েছে। মৃতের দাদা শুভঙ্কর শর্মা বলেন, বোন শ্বশুরবাড়িতে চরম অত্যাচার সহ্য করে বেঁচে ছিল। ওরা বাপেরবাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপ দিত। মারধর করত। মোবাইলে কথা বললেই সন্দেহ করত। শুভঙ্করবাবুর দাবি, অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বোন পাঁচবার আমাদের বাড়িতে চলে আসে। বুঝিয়ে ফের পাঠানো হয়।
বুধবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ পাপিয়াদেবী লুকিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাবাকে ফোন করে নিয়ে যাওয়ার আকুতি জানান। মৃতের শ্বশুরবাড়ির লোকের দাবি, সাড়ে ১০টা নাগাদ পাপিয়া শর্মাকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিস। মৃতের বাবা পেশায় লরি চালক নিমাই শর্মা বলেন, রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ আমি গাড়ি চালাচ্ছিলাম। মেয়ের ফোন পেয়ে বলি রাতটা অপেক্ষা কর। সকালে নিয়ে আসব। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ একজন ফোন করে জানায় মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমি আইনের পথে দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছি।