সংবাদদাতা, রামপুরহাট: পিচ ও পাথর উঠে কয়েকবছর আগেই রাস্তা বেহাল হয়ে পড়েছিল। এলাকার মানুষ ধুলোয় অতিষ্ঠ হচ্ছিলেন। তাঁদের প্রতিবাদের জেরে এখন রাস্তায় নিয়মিত জল দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তাতে খানাখন্দে জল জমে পুরো রাস্তা মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। তার মধ্যেই পাথরবোঝাই গাড়ি চলছে। রানিগঞ্জ-মোড়গ্রাম ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের সিএডিসি মোড় থেকে নলহাটি শহরে ঢোকার বাইপাস রাস্তার এমনই পরিস্থিতি। অভিযোগ, মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও প্রশাসনের হেলদোল নেই। রাস্তাটি সারাইয়ের দাবিতে ফের আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, দিনরাত বেহাল রাস্তা দিয়ে লরি যাওয়ায় পুরো এলাকা ধুলোয় ঢাকছে। ধুলোর সমস্যা মেটাতে রাস্তায় জল দেওয়া হয়। কিন্তু তাতে গর্তে জল জমে থাকছে। বেহাল রাস্তায় গাড়ির যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে প্রায়দিনই যানজট হচ্ছে। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে এখান দিয়ে চলতে হয়। তিনদিন আগেই এখানে ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে এক দু’বছরের শিশুর মৃত্যু হয়। এই রাস্তার উপর লেভেল ক্রসিংয়ের কাছে রেল ও রাজ্যের যৌথ উদ্যোগে ওভারব্রিজ তৈরি হয়েছিল। ২০২২ সালে যার উদ্বোধন হয়। কিন্তু ওভারলোডেড পাথরবোঝাই লরি চলাচলের জেরে সেতুর উপর পিচের আস্তরণ উঠে গিয়েছে।
ওই রাস্তার দৈর্ঘ্য ১৭০০ মিটার। এটি দিয়ে সহজে পাথর শিল্পাঞ্চল বাহাদুরপুর, ভবানন্দপুর, ছিলিমপুর, কুসুমজুলি সহ ঝাড়খণ্ডে যাওয়া যায়। নলহাটি শহর ছাড়াও আশপাশের এলাকার কয়েকহাজার বাসিন্দা ও পড়ুয়া রোজ এরাস্তা দিয়ে মহকুমা শহর ও রামপুরহাট মেডিক্যালে যাতায়াত করেন। এছাড়া, কয়েকহাজার লরি শিল্পাঞ্চলে যাওয়া-আসা করে। এলাকার বাসিন্দা সেপু শেখ, নাজেমুল হোদারা জানান, রাস্তায় জল দেওয়া হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু খানাখন্দে জল জমে রাস্তাটি মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। তাঁরা এর আগে বেশ কয়েকবার রাস্তা সংস্কারের দাবিতে অবরোধ করেছিলেন। প্রত্যেকবার প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেওয়া হলেও সমস্যা মেটেনি। পাথরবোঝাই গাড়ি থেকে কোটি কোটি রাজস্ব আদায় হলেও রাস্তা সংস্কার করা হচ্ছে না। এর প্রতিবাদে স্থানীয়রা ফের আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
পূর্ত(সড়ক) দপ্তরের জেলা এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অভিজিৎ বড়াই বলেন, সিএডিসি মোড় থেকে নলহাটির কোঠাতলা মোড় পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা বরাদ্দ হয়ে আছে। যেহেতু ২০১৭সালে রাস্তাটি ভালোভাবে সংস্কার হয়েছিল, তাই তিনটি লেয়ার দিয়ে রাস্তা সংস্কারের পরিকল্পনা করা হয়েছে। কিন্তু এলাকাবাসী পুরো রাস্তাটি নতুন করে তৈরির দাবি তুলেছেন। আমরা সমস্যা মেটাতে এলাকাবাসীর সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছি। আরওবির কাজ যে এজেন্সি করেছে, তাদের মেরামতের কাজের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। -নিজস্ব চিত্র