• বিল ছাড়াই ইউরিয়া বিক্রি বহুগুণ দামে
    বর্তমান | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: বোরো চাষের মরশুম শুরু হতেই ফায়দা তুলছে একশ্রেণির সার ব্যবসায়ী। এমআরপির চেয়ে অনেক বেশি দামে তারা ইউরিয়া বিক্রি করছে। তাদের বিরুদ্ধে যাতে কেউ অভিযোগ করতে না পারে তারজন্য রসিদ দেওয়া হচ্ছে না। এমনটাই অভিযোগ চাষিদের। তাঁরা বলেন, রসিদ চাইলে ব্যবসায়ীরা সার দিচ্ছে না। বাধ্য হয়েই বেশি দামে সার কিনতে হচ্ছে। অনেকসময় দাম কিছুটা কম নিলে ‘ট্যাগ’ দেওয়া হচ্ছে। ধান চাষে ইউরিয়া সার বেশি দরকার হয়। সেই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে ব্যবসায়ীরা।


    পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক আয়েশা রানি এ বলেন, যারা এমআরপির থেকে দাম বেশি নিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই ব্যবসায়ীদের আধিকারিকরা চিহ্নিত করবেন।


    কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এবছর জেলায় এক লক্ষ ৭০হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হওয়ার কথা রয়েছে। অধিকাংশ জমিতে ধান রোয়া হয়ে গিয়েছে। গলসি, ভাতার, মেমারি সহ বিভিন্ন ব্লকে এই ধান চাষ হয়। চাষিদের দাবি, ভাতার, মেমারি-২ ব্লক সহ সব জায়গাতেই দোকানগুলিতে সারের দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে। একটি সমবায় সমিতির সেক্রেটারি দেবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ৪৫ কেজি ইউরিয়ার এমআরপি ২৬৬ টাকা। কিছু খুচরো ব্যবসায়ী এমআরপির থেকে অনেক বেশি দামে সার বিক্রি করছে। এটা হওয়া উচিত নয়। সাতগেছিয়ার এক চাষি বলেন, খোলা বাজারে ৪৫ কেজি সারের দাম ৪৫০টাকা নেওয়া হচ্ছে। ট্যাগ নিলে কিছুটা কম দাম নেওয়া হচ্ছে। আর এক চাষি মহসিন মণ্ডল বলেন, এমআরপিতে সার বিক্রি হলে চাষিদের তেমন সমস্যা হতো না। আলু চাষের সময় ১০:২৬:২৬ সার নিয়ে কালোবাজারি করা হয়। এখন ইউরিয়ার দাম বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। চাষিদের রসিদও দেওয়া হচ্ছে না। আর এক চাষি সুকুমার মণ্ডল বলেন, ধান চাষের জন্য এনপিকে সারও দরকার হয়। তবে এই সারের দাম ততটা বেশি নেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু ইউরিয়া অনেক বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। আশা করি প্রশাসন পদক্ষেপ নেবে।


    ডিডিএ নকুল মাইতি বলেন, জেলায় পর্যাপ্ত সারের জোগান রয়েছে। তারপরও যারা সারের দাম বেশি নিচ্ছে তাদের চিহ্নিত করা হবে। এমআরপির চেয়ে সারের দাম কেউ বেশি নিতে পারে না। আমরা লাগাতার অভিযান চালাই। আগামী দিনে আরও বেশি নজরদারি বাড়ানো হবে। কৃষিদপ্তর সূত্রে আরও গিয়েছে, আলু চাষের মরশুমে আধিকারিকরা সারের দোকানগুলিতে অভিযান চালান। কয়েকজন বিক্রেতাকে শোকজও করা হয়। তার সুফল পাওয়া যায়। সারের দাম সেইসময় অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে ছিল। বোরো চাষের মরশুমেও অভিযান চালালে সারের কালোবাজারি বন্ধ হবে বলে চাষিরা আশাবাদী। 
  • Link to this news (বর্তমান)