নলহাটিতে আটক প্রচুর পরিমাণে বিস্ফোরক বোঝাই পিকআপ ভ্যান
বর্তমান | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: ফের প্রচুর পরিমাণে বিস্ফোরক বোঝাই পিকআপ ভ্যান আটক করল পুলিস। এবার নলহাটির ঝাড়খণ্ড সীমানায় গাড়িটিকে আটক করা হয়। উদ্ধার হয়েছে ৬০ ব্যাগ অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। যার প্রতিটি ব্যাগের ওজন ৫০ কেজি করে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে গাড়ির চালক ও খালাসিকে। একের পর এক বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলাজুড়ে। বৃহস্পতিবার ধৃতদের রামপুরহাট আদালতে তোলা হয়। সরকারি আইনজীবী সৈকত হাটি বলেন, পুলিসের পক্ষ থেকে ধৃতদের সাতদিন নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছিল। ভারপ্রাপ্ত এসিজেএম অন্বেষা চট্টোপাধ্যায় তিনদিন পুলিস হেফাজত মঞ্জুর করেছেন।
পুলিস জানিয়েছে, প্রতিদিনের মতো বুধবার সন্ধ্যায় নলহাটির সুলতানপুর গ্রামে আন্তঃরাজ্য সীমানায় নাকা চেকিং চালাচ্ছিল পুলিস। সেইসময় ঝাড়খণ্ডের নম্বরের একটি পিকআপ ভ্যান বাংলা থেকে ঝাড়খণ্ডে প্রবেশ করছিল। গাড়িটিকে তাড়াহুড়ো করে যেতে দেখে সন্দেহ হয় পুলিসের। গাড়ির পিছনের ডালার উপরে কাঠের পাটাতন দিয়ে ঘেরা। গাড়িটি দাঁড় করিয়ে সেটা খুলতেই পুলিস দেখে প্রচুর অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের বস্তা। গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করে পুলিস। সেই সঙ্গে বিস্ফারক বহনের বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় পুলিস গাড়ির চালক জুলকার আনসারি ও হেল্পার সেহেবুল আনসারিকে গেপ্তার করে। দু’জনেরই বাড়ি ঝাড়খণ্ডের দুমকা জেলার শিকারিপাড়া থানার কোলাবদর গ্রামে। উদ্ধার হওয়া অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের ব্যাগের গায়ে ছাপা অক্ষরে মহারাষ্ট্রের একটি সংস্থার নাম লেখা রয়েছে।
পুলিস সূত্রে খবর, সারারাত থানায় ধৃতদের জেরা করা হয়। কিন্তু কোথা থেকে বিস্ফারকগুলি লোড করে কোথায় আনলোড করা হতো তা স্পষ্ট করে বের করা যায়নি। পুলিসের দাবি, ধৃতদের কথাবার্তায় নানা অসঙ্গতি রয়েছে।
জেলার পুলিস সুপার আমনদীপ বলেন, নলহাটি হয়ে বিস্ফোরক বোঝাই করে গাড়িটি ঝাড়খণ্ডের দিকে যাচ্ছিল। দু’জনেকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট মামলা শুরু হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত পুরো র্যাকেটের খোঁজে তদন্ত চলছে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার রাতে রামপুরহাটের মনসুবা মোড়ে ৩২০ বস্তা অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বোঝাই ১৬ চাকার গাড়ি আটক করে পুলিস। গ্রেপ্তার করা হয় গাড়ির চালক, হেল্পার ও এক সঙ্গীকে। সকলের বাড়ি তেলেঙ্গানায়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিস জানতে পেরেছে, তেলেঙ্গানার সাঙ্গারেড্ডি জেলার চাইমনদারি কোনাপুর থেকে অবৈধ বিস্ফোরক বোঝাই লরিটি ঝাড়খণ্ডের সিরসিয়া, দেওঘর হয়ে দুমকা রোড ধরে সীমানা পেরিয়ে এরাজ্যে প্রবেশ করে। রামপুরহাট থেকে তারাপীঠের মাঝে কোথাও আনলোড করার পরিকল্পনা ছিল। এরই মধ্যে কয়েক কিমি দূরে নলহাটিতে প্রচুর বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।
পুলিসের এক কর্তা জানান, অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট হল খনির জন্য ব্যবহৃত বিস্ফোরকের প্রধান উপাদান। ইম্প্রোভাইজড বিস্ফোরক মিশ্রণেও অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের ব্যবহার করা হয়। উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক পাথর খাদানে নাকি নাশকতার কাজে ব্যবহারের জন্য নিয়ে আসা হচ্ছিল তা খতিয়ে দেখছে পুলিস।