• কলেজপাড়ায় পোস্টার দিয়ে কিউআর কোড, স্ক্যান করতেই আক্কেল গুড়ুম
    বর্তমান | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: আজ, শুক্রবার ভ্যালেন্টাইন্স ডে বা ভালোবাসার দিন। তার ২৪ ঘণ্টা আগে বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি শহরের কলেজপাড়ায় একাধিক পোস্টার ঘিরে চঞ্চল্য ছড়ায়। ওই পোস্টার সাঁটা হয় বিভিন্ন বাড়ির দেওয়ালে, গাছে, ইলেকট্রিক পোলে। সেখানে লেখা ছিল— রোহন ইউ চিটেড অন মি! হেয়ার আর ইউর পিক্‌স, নাও এভরিওয়ান উইল সি’। ওই লেখার নীচে একটি কিউআর কোড দেওয়া হয়। 


    পোস্টার নজরে পড়তেই পথচলতি মানুষ দাঁড়িয়ে গিয়ে সেই পোস্টারে থাকে কিউআর কোড মোবাইলে স্ক্যান করে। আর তা স্ক্যান করতেই রীতিমতো আক্কেল গুড়ুম কৌতুহলী জনতার। এ যে চালাক চতুর মার্কেটিং কৌশল! কারণ স্ক্যান করার পর মোবাইলের স্ক্রিনে ফুটে উঠছে একাধিক ফুলের তোড়ার ছবি। সঙ্গে সেগুলির দাম ও একটি মোবাইল নম্বর। কিন্তু কৌতূহলবশত যে ছবি দেখতে কিউআর কোড স্ক্যান করা হল তার কিছুই মিলল না তাতে। সব কৌমূহলে জল পড়তেই অনেকে তীব্র বিরক্তি প্রকাশ করেন। ক্ষুব্ধ হয়ে কেউ সেই পোস্টার ছিঁড়েও ফেলেন। 


    ভালোবাসার সপ্তাহে এমন মজার ঘটনা নিয়ে শহরজুড়ে দিনভর চলে চর্চা। কেউ কেউ এর পিছনে ব্যবসা করার নতুন চিন্তাভাবনা আবার কেউ সাইবার প্রতারকেদের নয়া জাল বলে মনে করছেন। কেউ আবার নিছকই মজা হিসেবে বিষয়টি দেখছেন। কিউআর কোডে দেওয়া মোবাইল নম্বরে অনেকেই ফোন করেন। কিন্তু বারবার রিং হলেও ফোন কেউ রিসিভ করেননি বলে তাঁরা জানিয়েছেন। সব মিলিয়ে ভ্যালেন্টাইন্স ডে’র ঠিক আগে এমন অভিনব পোস্টার ঘিরে পথচলিত লোকজনের মধ্যে কৌতূহল ছিল তুঙ্গে। 


    বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে কলেজপাড়া এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ প্রথমে এমন পোস্টার দেখেন। কলেজের গেটের গায়েও ছিল এমন পোস্টার। শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবের বাড়ির পাশের গলিতে কমার্স কলেজের পিছনের রাস্তায় একাধিক গাছে, বিদ্যুতের পোলে এই পোস্টার সাঁটানো ছিল। এদিন কলেজের পিছনের রাস্তায় পাইপ বসানোর কাজ করছিলেন একটি এজেন্সির লোকজন। তাঁদের জিজ্ঞাসা করা হলে জানা যায়, সকালে কয়েকজন কম বয়সি ছেলেমেয়ে এলাকাজুড়ে পোস্টার সাঁটিয়ে চলে যায়। বিষয়টি বুঝতে না পেরে প্রথমদিকে ওই এজেন্সির শ্রমিকরাও খুব একটা পাত্তা দেননি। পরে তাঁরা দেখেন একের পর এক পথচলতি মানুষ দাঁড়িয়ে পকেট থেকে মোবাইলে বের করে সেই পোস্টারের ছবি তুলছে। কেউ হেসে চলে যাচ্ছেন। আবার কেউ পোস্টার ছিঁড়ে দিয়ে চলে যাচ্ছেন। সেসব দেখে খানিকটা অবাকও হন তাঁরা। পরে সংবাদমাধ্যমের বেশকিছু প্রতিনিধি এলাকায় পৌঁছে বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করলে ওই শ্রমিকরা পুরো ঘটনাটি জানতে পারেন। 


    ওই শ্রমিকদের মধ্যে প্রতাপ রাণা বলেন, আমরা কিছু ছেলেমেয়েকে পোস্টার সাঁটাতে দেখেছিলাম। তাতে খুব একটা আগ্রহ ছিল না। তবে পরে অনেকে বারবার এসে ওই বিষয়ে খোঁজখবর করায় পর সবটা জানতে পারলাম। কেউ হয়তো মজা করে থাকতে পারেন।


    পুলিস অবশ্য এভাবে অচেনা অজানা কিউআর কোড স্ক্যান করা থেকে বিরত থাকারই পরামর্শ দিচ্ছে। শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের ডিসিপি (পূর্ব) রাকেশ সিং বলেন, এই ধরনের কিউআর কোড স্ক্যান করা একেবারেই ঠিক নয়। ঘটনাটি খতিয়ে দেখে কে বা কারা কেন এমন কিছু করল তা দেখা হবে। সকলকে সচেতনও করা হবে যাবে এমন কিউআর কেউ স্ক্যান না করেন। 
  • Link to this news (বর্তমান)