নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়ি: বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার নাম করে নাবালিকাকে যৌন নিগ্রহের ঘটনায় এক যুবককে গ্রেপ্তার করল পুলিস। ধৃতের নাম সঞ্জীবকুমার সাহানি ওরফে সঞ্জয়। তার আদিবাড়ি বিহারে। শিলিগুড়ির ঝঙ্কার মোড় এলাকায় ভাড়া থাকে সে। দু’দিন আগে জলপাইগুড়ির বাহাদুর পঞ্চায়েতের জহুরি তালমা এলাকায় উদ্ধার হয় ওই নাবালিকা। সেখান থেকেই ওই যুবককে আটক করে পুলিস। কিন্তু ঘটনাস্থল যেহেতু শিলিগুড়ি জংশন স্টেশন চত্বর, সেকারণে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিস বৃহস্পতিবার ‘জিরো এফআইআর’ করে পাঠিয়ে দেয় শিলিগুড়ি জিআরপি’র কাছে। পকসো মামলায় ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে এদিন আদালতে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন শিলিগুড়ি রেল পুলিস সুপার কুনওয়ারভূষণ সিং। তদন্তের স্বার্থে ধৃতকে হেফাজতে নিতে আজ, শুক্রবার আদালতের কাছে আবেদন জানানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
গত মঙ্গলবার রাতে জলপাইগুড়ির জহুরি তালমা এলাকায় বছর বারোর এক নাবালিকাকে নিয়ে ইতস্তত ঘোরাঘুরি করছিল ওই যুবক। বাসিন্দাদের সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা বিষয়টি জানতে চান। সেসময় ওই যুবক দাবি করে, কোচবিহারের নিশিগঞ্জে নাবালিকাকে তার বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিয়ে যাচ্ছিল সে। কিন্তু ভুল বাসে উঠে পড়ায় জলপাইগুড়িতে নামতে হয়। এরপর রাস্তা চিনতে না পেরে ওই নাবালিকাকে নিয়ে সে এখানে চলে এসেছে। যদিও যুবকের কথায় সন্দেহ হয় এলাকার লোকজনের। সেইসঙ্গে মেয়েটিও দাবি করে, ওই যুবককে সে চেনে না। এটাও বলে, ওই যুবক তারসঙ্গে অভব্য আচরণ করেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিস। আটক করা হয় অভিযুক্তকে। উদ্ধার হওয়া নাবালিকার এখনও পর্যন্ত ডাক্তারি পরীক্ষা করানো না গেলেও কোতোয়ালি থানার পুলিসের দাবি, জেরায় ওই যুবক মেয়েটিকে যৌন নিগ্রহের কথা স্বীকার করেছে। তাছাড়া নাবালিকাও জানিয়েছে, তার সঙ্গে ওই যুবক অশালীন আচরণ করেছে।
এদিকে, শিলিগুড়ি থেকে ওই নাবালিকাকে নিয়ে জলপাইগুড়িতে আসার পিছনে অভিযুক্ত যুবকের আর কোনও মতলব ছিল কি না সেটাই এখন খতিয়ে দেখছে পুলিস। ইতিমধ্যেই অবশ্য ধৃত যুবকের দেওয়া বয়ানে একাধিক জায়গায় খটকা লেগেছে পুলিসের। তাছাড়া ক্ষণে ক্ষণে বয়ান বদল করেছে ওই যুবক। এতেই তার প্রতি সন্দেহ আরও তীব্র হয়েছে পুলিসের।
বাসিন্দাদের হাতে ধরা পড়ার পর ওই যুবক দাবি করেছিল, শিলিগুড়ির জলপাই মোড়ে মেয়েটির সঙ্গে দেখা হয়। কিন্তু পরে পুলিস জানতে পারে, জংশন স্টেশন চত্বর থেকে মেয়েটিকে নিয়ে আসে। তাছাড়া ওই যুবক প্রথমে দাবি করেছিল, কোচবিহারের নিশিগঞ্জে মেয়েটিকে বাড়ি পৌঁছে দিতে যাচ্ছিল সে। কিন্তু মেয়েটিকে নিয়ে শিলিগুড়ি থেকে ভুল করে অসমগামী বাসে উঠে পড়ে। সেকারণে জলপাইগুড়ির পাহাড়পুরে বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় তাদের। কিন্তু পরে জানা যায়, মেয়েটির বাড়ি শিলিগুড়ির শক্তিগড়ে। পুলিসের বক্তব্য, মেয়েটি যদি ওই যুবককে বাড়িতে পৌঁছে দিতে বলে, কাউকে কিছু না জানিয়ে হঠাৎ করে সে মেয়েটিকে নিয়ে বাসে উঠে পড়ল কেন? জলপাইগুড়িতে পৌঁছে কেনই বা থানায় যোগাযোগ করল না? এর পিছনে অন্য মতলব থাকতে পারে।