• চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে অনাস্থা পাশ তুফানগঞ্জে
    বর্তমান | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, তুফানগঞ্জ: মেখলিগঞ্জের পর এবার তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত তুফানগঞ্জ পুরসভার চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা ঈশোরের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা পাশ করালেন দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলার। কোচবিহার জেলার পুরসভাগুলিতে একের পর এক রাজনৈতিক ডামাডোল চলছে। যা নিয়ে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বারবার সামনে আসছে। 


    বৃহস্পতিবার তুফানগঞ্জ পুরসভার তিন কাউন্সিলারের ডাকে কনফারেন্স হলে আস্থা ভোট হয়। চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা ঈশোর, ভাইস চেয়ারম্যান তনু সেন সহ দলের ১২ জন কাউন্সিলারই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে কৃষ্ণা ঈশোরকে সরিয়ে ভেঙে দেওয়া হয় পুরবোর্ড। 


    প্রসঙ্গত, ১৭ জানুয়ারি চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা সহ একাধিক অভিযোগ তুলে মহকুমা শাসকের দপ্তরে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন দলের ১০ জন কাউন্সিলার। পরের দিন কাউন্সিলাদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন চেয়ারপার্সন। যদিও তা এড়িয়ে দলের এক কাউন্সিলারের বাড়িতে বৈঠক করেন পুর প্রতিনিধিরা। এরপরই পুরসভা বয়কটের সিদ্ধান্ত নেন ওই কাউন্সিলাররা। 


    এদিকে, পুরআইন অনুযায়ী অনাস্থা আনার ১৫ দিনের মধ্যে চেয়ারপার্সনকে তলবি সভা ডাকতে হয়। চেয়ারপার্সনের তলবি সভা ডাকার মেয়াদ শেষের সাত দিনের মধ্যে ভাইস চেয়ারম্যান সভা ডাকতে পারেন। অথচ তুফানগঞ্জ পুরসভার ক্ষেত্রে দু’জনের কেউই তলবি সভা ডাকেননি। এরপর নিয়ম মেনেই দলের তিন কাউন্সিলার তলবি সভার ডাক দেন। এদিন ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার বিনোদবিহারি বর্মনকে সভাপতি করে সভার কাজ শুরু হয়। আস্থা ভোটে চেয়ারপার্সনকে ভাইস চেয়ারম্যান সর্মথন করেন। বাকি ১০ কাউন্সিলারই অনাস্থার পক্ষে সমর্থন করেন। 


    কৃষ্ণা ঈশোর বলেন, বৈঠকে কাউন্সিলারদের কেউই আমার বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনও তথ্যপ্রমাণ আনতে পারেননি। শুধু একটাই আক্ষেপ, দুর্নীতি না করেও সরে যেতে হয় তা বুঝলাম। 


    বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হতেই তৃণমূলের কোচবিহার জেলা নেতৃত্ব হস্তক্ষেপ করে। অনাস্থা আনা বিক্ষুব্ধ ১০ কাউন্সিলারকে নিয়ে পুরসভায় বৈঠক করেন জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক। যদিও অভিজিৎবাবু এ ব্যাপারে সংবাদ মাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি। ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার তথা শহর তৃণমূলের সভাপতি ইন্দ্রজিৎ ধর বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থনে পুরবোর্ড ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তবে দলীয় নির্দেশে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নতুন করে চেয়ারম্যান নিয়োগের প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হয়েছে। 


    আর এ নিয়ে রাজ্যের শাসকদলকে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা। বিজেপির জেলা সহ সভাপতি উজ্জ্বলকান্তি বসাক বলেন, নাগরিক পরিষেবা নিয়ে এই পুরবোর্ডের কোনও মাথাব্যথা নেই। এরা নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা নিয়ে ব্যস্ত। যার পরিণাম এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য অসীম সাহা বলেন, অনাস্থা ইস্যুতে নাটক চলছে। যার ফল পুর নাগরিকদের ভুগতে হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)