চলতি মাসের মধ্যে ভাড়া না মেটালে স্টলগুলি সিজ করবে মহকুমা পরিষদ
বর্তমান | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: ২৪টি স্টলের বকেয়া ভাড়ার পরিমাণ প্রায় ২০ লক্ষ টাকা! অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সেই ভাড়া না দিয়ে নকশালবাড়ি মার্কেট কমপ্লেক্সের স্টলগুলি কব্জা করে রেখেছেন চার ব্যবসায়ী। আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে তা পরিশোধ করা না হলে স্টলগুলি সিজ করবে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ। ইতিমধ্যে তারা ‘কর’ খেলাপিতে অভিযুক্ত ওই ব্যবসায়ীদের বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছে। অভিযুক্তদের তালিকায় স্থানীয় কংগ্রেস নেতাও রয়েছেন। গ্রামে এনিয়ে ব্যাপক আলোড়ন পড়েছে।
নকশালবাড়ি মার্কেট কমপ্লেক্সের সংশ্লিষ্ট স্টলগুলির বকেয়া ভাড়া আদায় করতে দীর্ঘদিন ধরে তৎপর মহকুমা পরিষদ। তারা বহুবার চেষ্টা চালিয়েও অভিযুক্ত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বকেয়া ভাড়া তুলতে পারছে না। এজন্য বুধবার সন্ধ্যায় সংশ্লিষ্ট মার্কেটে গিয়ে অভিযুক্তদের সঙ্গে বৈঠক করেন সভাধিপতি অরুণ ঘোষ। বৈঠকে মহকুমা পরিষদের আধিকারিকরাও হাজির ছিলেন।
পরে সভাধিপতি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মার্কেট কমপ্লেক্সের স্টল দখলে রাখলেও ব্যবসায়ীরা ভাড়া মেটাচ্ছেন না। এব্যাপারে তাঁদের কাছে একাধিকবার নোটিস পাঠিয়েও লাভ হয়নি। এবার তাঁদের শেষ সুযোগ দেওয়া হল। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি মধ্যে ভাড়া না মেটালে তাঁদের কাছ থেকে স্টলগুলি সিজ করে নেওয়া হবে। পরবর্তীতে আইন অনুসারে টেন্ডার ডেকে সেগুলি আবার ভাড়া দেওয়া হবে।
নকশালবাড়ির পানিঘাটা মোড়ে ওই বহুতল মার্কেট কমপ্লেক্স অবস্থিত। কমপ্লেক্সের নীচতলা ও দোতলায় স্টলের সংখ্যা অনেক। পরিষদ সূত্রের খবর, গ্রামীণ এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে ২০১৩ সালে ওই মার্কেট কমপ্লেক্স চালু করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে সেখানকার ২৪টি স্টল থেকে ভাড়া মিলছে না। সেই তালিকায় কমপ্লেক্সের নীচতলায় চারটি এবং দোতলায় ২০টি স্টল রয়েছে। সেগুলির বকেয়া ভাড়ার পরিমাণ ২০ লক্ষ টাকা। যারমধ্যে দোতলার ২০টি স্টল স্থানীয় কংগ্রেস নেতার কব্জায়। সেগুলির মাসিক ভাড়ার পরিমাণ ১৫ হাজার টাকা। সাত মাসে অভিযুক্তের বকেয়ক ভাড়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লক্ষেরও বেশি।
স্থানীয়রা বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস শাসিত মহকুমা পরিষদের বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যে গলা ফাটায় কংগ্রেসিরা। অনেক নীতি, অদার্শের কথা বলেন তাঁদের নেতারা। কিন্তু, নকশালবাড়িতে তাঁদের নেতাই ‘কর’ খেলাপিতে অভিযুক্ত। এটা মানা যায় না। অভিযুক্ত কংগ্রেস নেতা উজ্জ্বল দাস অবশ্য বলেন, এবিষয়ে কিছু বলার নেই। এব্যাপারে যা বলার মহকুমা পরিষদ বলবে। এর সঙ্গে রাজনীতিরও কোনও সম্পর্ক নেই।
সমগ্র ঘটনা ঘিরে স্থানীয় এলাকায় ব্যাপক চর্চা শুরু হয়েছে। মহকুমা পরিষদ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গ্রামীণ উন্নয়নের জন্য নিজস্ব আয় বাড়ানোতে জোর দেওয়া হয়েছে। তাই এধরনের ‘কর’ খেলাপিদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে ওই মার্কেট কমপ্লেক্সের দু’জন ব্যবসায়ী বকেয়া ভাড়া মেটানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।