বিজেপিকে ভোট দিলে ‘লাড্ডু’, না দিলে বঞ্চনা, আক্রমণ অভিষেকের
বর্তমান | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কেন্দ্র আর্থিক অবরোধ তৈরি করার পরেও বাংলা যেভাবে নিজ ক্ষমতায় এগিয়ে চলেছে, তা তথ্য-পরিসংখ্যান সহকারে বিশ্লেষণ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার তিনি দাবি করেন, যাঁরা বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন, তাঁরা কী পেলেন? বিজেপিকে ভোট দিলে ‘লাড্ডু’, না দিলে ‘বঞ্চনা’!
‘আচ্ছে দিন’-এর আশায় অনেকেই বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে তাঁদের প্রাপ্তি কী হয়েছে, সেটাই উঠে এসেছে অভিষেকের মূল্যায়নে। মূল্যবৃদ্ধি, জিএসটি, রান্নার গ্যাসের দাম বৃদ্ধি, বেকারত্বসহ নানা ক্ষেত্রেই নাভিশ্বাস উঠেছে আম জনতার। মনে করেন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড। আবার বাংলায় বিজেপিকে না জেতানোয় ১০০ দিনের কাজ, আবাস, গ্রাম সড়ক যোজনাসহ বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে মোদি সরকার। এইভাবে বাংলার মানুষের সঙ্গে কেন্দ্র বঞ্চনা করে চলেছে বলেই বক্তব্য অভিষেকের। এই প্রেক্ষাপটেই তৃণমূলকে ভোট দিলে বাংলার মানুষের প্রাপ্তি কী কী, তার উদাহারণ টেনে এনেছেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বাজেটের নানাদিক তুলে ধরে অভিষেক বলেন, কেন্দ্রের বাজেট হল ভাঁওতা। আর আমরা কথা দিলে কথা রাখি।
বরাদ্দ করা হয়েছে কর্মসংস্থান, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়নের জন্য ৪৪ হাজার কোটি টাকা। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য বরাদ্দের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা। এছাড়া প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে গঙ্গাসাগর সেতু, পথশ্রী প্রকল্প, উত্তরবঙ্গের চাবাগান, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নসহ রাজ্যের বিবিধ কর্মকাণ্ডে। অভিষেক বলেন, রাজ্যের বাজেটে জাত, ধর্ম, এলাকা, রাজনৈতিক দল দেখে কোনও বরাদ্দ করা হয়নি। অন্যদিকে, কেন্দ্রের সংখ্যালঘু বিষয়ক দপ্তরের বাজেট ১৫৭৫ কোটি টাকা থেকে নামিয়ে আনা হয়েছে মাত্র ৬৮২ কোটিতে! অভিষেক বলেন, বিজেপির বিভাজনের রাজনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে, আগামী দিনে আরও পড়বে। বুধবার রাজ্য বাজেট পেশ হওয়ার পর বিজেপি নেতাদের সুর চড়াতে দেখা গিয়েছে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা সুকান্ত মজুমদার থেকে বিজেপির একাধিক নেতা নানা প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। সেসবের জবাবে অভিষেক বলেছেন, বিরোধীরা দিশাহীন হয়ে পড়েছে। সমালোচনা করছে সেই কারণেই। মাত্র ৫ হাজার ভোট কম পেলে সুকান্ত মজুমদার লোকসভা নির্বাচনে হেরে যেতেন। পরের বার তিনি তাঁর আসন ধরে রাখতে পারবেন না। নিজে আত্মবিশ্লেষণ করে বলুন, বাংলার জন্য কী করেছেন তিনি? লোকসভা ভোটের পর থেকে এপর্যন্ত বাংলার জন্য তারা কী করেছে, তা নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করুক বিজেপি।
বাংলার মানুষের জন্য যেভাবে উন্নয়ন করা হয়েছে, তাতে ২০২৬ সালে তৃণমূল ফের ক্ষমতায় ফিরছে বলে সোমবার প্রত্যয়ের সঙ্গেই জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সূত্রেই অভিষেক বলেন, ২০১৪, ২০১৬, ২০১৯, ২০২১, ২০২৪ সালের নির্বাচনে আমরা একলা লড়াই করে ভালো ফল করেছি। একলা লড়াই করে আবারও ভালো ফল করব। এদিন সাতগাছিয়া বিধানসভা এলাকায় সেবাশ্রয় স্বাস্থ্য শিবির পরিদর্শন করেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ। সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন তিনি। অন্যদিকে, অভিষেকের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে তথ্য বিকৃতির অভিযোগে মেটাকে কর্তৃপক্ষকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন তিনি। সেখানে তাঁর অভিযোগ, ফেসবুক পেজে অভিষেকের নাম ও পদ ঠিক থাকলেও দলের নাম ছিল উধাও! এই ব্যাপারে নির্দিষ্ট জায়গায় অভিযোগ জানানোর পরেই অবশ্য ফিরেছে আগের তথ্য।