দত্তপুকুরে খুন কাণ্ডে ১০ দিন পর জম্মু থেকে গ্রেপ্তার মূল অভিযুক্ত
বর্তমান | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: ১০ দিন পরে দত্তপুকুর খুন কাণ্ডে ‘মূল’ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করল পুলিস। বুধবার জম্মু থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতের নাম মহম্মদ জলিল গাজি। তদন্তকারীদের দাবি, খুন করে মুণ্ড লোপাট করেছিল জলিলই। তার স্ত্রী সুফিয়া বিবিকে আগেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। তাকে জেরা করে ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে জম্মু থেকে জলিলকে গ্রেপ্তার করেছে দত্তপুকুর থানার পুলিস। ট্রানজিট রিমান্ডে তাকে বারাসত আনার প্রস্তুতি চলছে। তদন্তকারীরাদের হাতে আসা তথ্য অনুযায়ী, এটি পূর্ব পরিকল্পিত খুন। কেন না, খুনের পর জম্মু পালিয়ে যাওয়ার জন্য আগেই টিকিট কেটে রেখেছিল জলিল!
গত ৩ ফেব্রুয়ারি, সোমবার দত্তপুকুরের বাজিতপুরে কৃষি জমিতে অর্ধদগ্ধ, নগ্ন এবং মুণ্ডহীন এক যুবকের দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনার দু’দিন পর নিহত যুবকের পরিচয় জানা যায়। পুলিস জানতে পারে, মৃতের নাম হজরত লস্কর। তাঁর মাসতুতো ভাই ওবাইদুল গাজি, হজরতের প্রাক্তন প্রেমিকা পূজা দাসকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। খুনের পিছনে ত্রিকোণ প্রেম ও ব্যক্তিগত আক্রোশ রয়েছে বলে জানতে পারে পুলিস। ওবাইদুল, পূজা গ্রেপ্তারের একদিন পরেই সুফিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, খুনের জন্যই গাইঘাটার বাড়ি থেকে হজরতকে ডেকে আনে জলিল। স্ত্রী সুফিয়ার ভাড়া বাগান বাড়িতে হজরতকে রাখা হয়। সেখান থেকে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রও উদ্ধার হয়েছে। পুলিস তদন্তে জানতে পারে, খুনের সময় জলিল অকুস্থলেই ছিল। খুনের পর প্রমাণ লোপাট করতে মাথাও কেটেছে সে। যে মাথা এখনও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিস।
উল্লেখ্য, জলিল ও সুফিয়া জম্মুতে কাজ করত। সেই সূত্রেই জলিল জম্মুতে পালায়। সুফিয়াকে লাগাতার জেরা করে বামনগাছি, কলকাতা সহ কয়েকটি স্টেশনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে তদন্তকারীরা। দেখা যায়, জলিল ৩ ফেব্রুয়ারি সকালে বামনগাছি স্টেশন থেকে শিয়ালদহগামী ট্রেনে উঠেছিল। আবার কলকাতা স্টেশন থেকে সে জম্মু-তাওয়াই এক্সপ্রেসে ওঠে। কয়েকদিন আগে পুলিস সুপারের নির্দেশে দত্তপুকুর থানার চারজনের একটি পুলিস টিম জম্মু পৌঁছয়। সেখান থেকেই বুধবার জলিলকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। বৃহস্পতিবার ধৃতকে জম্মু আদালতে তোলা হলে ট্রানজিট রিমান্ড পেয়েছে পুলিস। এনিয়ে বারাসত পুলিস জেলার সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খড়িয়া বলেন, হজরত খুনের মূল অভিযুক্ত জলিল পুরনো কর্মক্ষেত্র জম্মুতে পালিয়েছিল। স্ত্রীকে জেরা করে ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে জম্মুতে পুলিসের টিম পাঠিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিসি হেফাজতে নিয়ে খুনের কারণ, ও মুণ্ডর হদিশ করা হবে। নিজস্ব চিত্র