বালিতে মধ্যরাতে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, ট্যাক্সিতে ধাক্কা ডাম্পারের, মৃত ২
বর্তমান | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বালির দেওয়ানগাজি এলাকায় জিটি রোডের ওপর মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। মৃতদের নাম দিব্যেন্দু দেবনাথ (৩৫) ও সিয়ারাম প্রসাদ (৪৯)। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি সিমেন্ট মেশানোর ডাম্পার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি হলুদ ট্যাক্সির সামনের দিকে ধাক্কা মারে। দুর্ঘটনায় কার্যত দুমড়ে-মুচড়ে যায় ট্যাক্সিটি। হলুদ ট্যাক্সির চালক ছিলেন সিয়ারাম। পিছনে আরোহীর আসনে বসেছিলেন দিব্যেন্দুবাবু। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান দু’জনে। একই সঙ্গে আরও বেশ কয়েকটি বাইককে ধাক্কা মারে ডাম্পারটি। আহত সেই বাইক চালকদের হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে হলুদ ট্যাক্সিটি বেলুড়ের দিক থেকে জিটি রোড ধরে বালি ব্রিজের দিকে যাচ্ছিল। অন্যদিকে বালি ব্রিজ থেকে বেলুড় বাজারের দিকে আসছিল ডাম্পারটি। আচমকাই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডাম্পারটি ট্যাক্সিটিকে ধাক্কা দেয়। হলুদ ট্যাক্সিটি রাস্তার ধারের একটি পুরনো বাড়ির গোডাউনের প্রায় ভেতরে ঢুকে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন বালি ট্রাফিক গার্ড, বালি থানা ও হাওড়া সিটি পুলিসের পদস্থ কর্তারা। প্রথমে আর্থ রিমুভারের সাহায্যে ডাম্পারটিকে সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর গ্যাস কাটার দিয়ে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া ট্যাক্সির পেছনের অংশ কেটে চালক ও আরোহীর দেহ বের করা হয়। দু’জনকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁদের মৃত বলে জানিয়ে দেন। এই দুর্ঘটনায় বেশ কয়েকজন বাইক আরোহীও গুরুতর জখম হন।
পুলিস জানিয়েছে, কলকাতায় একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত দিব্যেন্দু বুধবার রাতে এক্সাইড মোড় থেকে ট্যাক্সি করে বালির বাড়িতে ফিরছিলেন। তখনই ঘটে যায় এই দুর্ঘটনা। এদিকে এই ঘটনায় বালি জিটি রোডে প্রায় ঘণ্টা তিনেক যান চলাচল কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায়। গভীর রাতে জিটি রোডে তীব্র যানজট তৈরি হয়। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি দু’টিকে সরানোর পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে দুর্ঘটনার পরই পালিয়ে যায় ডাম্পারের চালক। তার খোঁজে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত তল্লাশি চালায় পুলিস। রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান হাওড়া সিটি পুলিসের এসিপি নর্থ আনন্দজিৎ হোড় ও বালির বিধায়ক রানা চট্টোপাধ্যায়। দুর্ঘটনার পর ট্যাক্সি থেকে প্রচুর ডিজেল বেরিয়ে গিয়েছিল। এর ফলে যাতে বড় কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে, সেজন্য এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ কিছুক্ষণের জন্য বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।