শেষ হল বাঁশবেড়িয়ার মিনি কুম্ভ, অন্তিম দিনও নজরকাড়া ভিড়
বর্তমান | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: বুধবার নির্বিঘ্নে মিটেছিল শাহি স্নান। বৃহস্পতিবার নির্বিঘ্নেই শেষ হল বাঁশবেড়িয়ার মিনি কুম্ভ। শেষদিনও নজরকাড়া ভিড় ছিল বাঁশবেড়িয়ার সপ্তর্ষি ঘাটে। ছিল রাজনৈতিক নেতাদের আনাগোনা। শেষ দিন সাধুসন্তরা আয়োজন নিয়ে কিছু অভাব-অভিযোগ তোলেন। বৃহস্পতিবার সপ্তর্ষি ঘাটে জ্বলেছে যজ্ঞের ধুনি। কুম্ভের শেষদিন বাঁশবেড়িয়াতে এসেছিলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বিকেলে এসেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্না। উদ্যোক্তারা মঞ্চে তাঁকে সংবর্ধনা দেন।
বাঁশবেড়িয়া পুরসভার চেয়ারম্যান আদিত্য নিয়োগী বলেন, ‘রাজ্য সরকারের উদ্যোগে নির্বিঘ্নে কুম্ভ মিটেছে। আমরা সমস্ত প্রয়োজনীয় পরিষেবার সঙ্গে নিরাপত্তাও দিয়েছি। সাধুসন্তদের কাছ থেকে প্রশংসা পেয়েছি।’ বৃহস্পতিবার মন্ত্রী বেচারাম মান্না রাজ্য পুলিস ও প্রশাসনের ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘মেলা সফল করতে পুলিস ও প্রশাসন বেনজির পরিশ্রম করেছে। আমাদের বাংলা সংহতির ও সমন্বয়ের বাংলা। পুণ্যতীর্থে কুম্ভের আয়োজনে কোনও খামতি রাখা হয়নি। পুণ্যার্থীরা রীতিমতো আপ্লুত। আমরা মানুষের আবেগের মূল্য দিই। কিন্তু তাঁদের আবেগ নিয়ে রাজনীতি করি না।’ কুম্ভের শেষ দিন বাঁশবেড়িয়ার গঙ্গায় নেমে প্রণাম করেন বিজেপির দিলীপ ঘোষ। বারবার রামের নামে জয়ধ্বনি দেন তিনি। বলেছেন, ‘কোনও রাজনৈতিক বিষয় কুম্ভে ছিল না। আমরা সনাতনী। তাই যেখানে সনাতন ধর্মচর্চার সুযোগ থাকে, পুণ্য অর্জনের অবকাশ থাকে, সেখানেই যাই। সেভাবেই বাঁশবেড়িয়ায় এসেছি।’ যদিও এদিন তিনি মিনি কুম্ভে দাঁড়িয়ে প্রয়াগের কুম্ভের প্রশংসা করেছেন। তাঁর দাবি, এ বছর ভারতবর্ষের উত্থানের বছর। মোদি-যোগীর তত্ত্বাবধানে প্রয়াগের কুম্ভ থেকেই তার সূচনা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, ’২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা বাড়ানো হবে। কারণ রাজ্যকে ভোট কিনতে হবে।
প্রাচীনকালে প্রয়াগের কুম্ভে যাওয়ার পথে সাধুসন্তরা বাঁশবেড়িয়ায় আশ্রয় নিতেন। আবার কুম্ভ থেকে ফেরার পথেও পুণ্যতীর্থে বিশ্রাম নিতেন। সেই সুবাদে কুম্ভ স্নানের আবহ তৈরি হয়েছিল ত্রিবেণীতে। এমন দাবি করে ২০২২ সাল থেকে কুম্ভের আয়োজন শুরু হয় বাঁশবেড়িয়ায়। ১১ ফেব্রুয়ারি ত্রিবেণীর পুণ্যতীর্থে চতুর্থবারের মিনি কুম্ভের সূচনা হয়েছিল। সনাতন ধারা মেনে নানা আয়োজনের সাজে সেজে উঠেছিল বাঁশবেড়িয়ার গঙ্গার ঘাট। ভক্ত সমাগম থেকে সাধু, নাগা সাধুদেরও বিপুল উপস্থিতি নজর কেড়েছিল। সেই সঙ্গে প্রশাসন ও পুলিস দুর্ঘটনা এড়ানোকে পাখির চোখ করে। বৃহস্পতিবার নির্বিঘ্নেই বেজেছে বিসর্জনের বাদ্যি। এদিনই উদ্যোক্তারা দাবি করছেন, আগামী বছর আরও ব্যাপক আয়োজন হবে। সে কারণে সপ্তর্ষি ঘাটে পরবর্তী কুম্ভ স্নানের প্রস্তুতি নেওয়ার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে।