• অনেকটাই বেড়েছে চালের দাম,  হিমশিম অবস্থা সাধারণ মানুষের
    বর্তমান | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: খোলাবাজারে চালের দাম বেড়ে গিয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের হিমশিম অবস্থা। কয়েক মাসের মধ্যে প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ১০ টাকা! যে মিনিকিট চাল খুচরো বাজারে ৫০ টাকায় মিলত তার দাম এখন ৬০ টাকার মতো। ৭০ টাকার বাঁশকাঠি চাল ৮০ টাকাও ছুঁয়েছে। চালের দামবৃদ্ধির কারণগুলির মধ্যে  গুরুত্বপূর্ণ একটি হল প্রচুর পরিমাণে বিদেশে রপ্তানি। পশ্চিমবঙ্গের চালও পাশের বাংলাদেশ ছাড়াও যাচ্ছে আরবসহ এশিয়ার কিছু দেশে এবং আফ্রিকায়। 


    ২০২৪ লোকসভা ভোটের আগে বিদেশে চাল রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ করেছিল কেন্দ্র। দেশের বাজারে দাম কমানোই ছিল তার উদ্দেশ্য। ভোট মিটতেই উঠে গিয়েছে সেই নিষেধাজ্ঞা, এমনকী চাল রপ্তানির উপর করও তুলে দিয়েছে কেন্দ্র। তাতে চালের বিদেশি বাজার আরও উন্মুক্ত হয়ে গিয়েছে। বিদেশে রপ্তানি বেড়ে যাওয়ায় দেশের বাজারে চাহিদার তুলনায় জোগান কমে গিয়েছে। চালের দাম বাড়ছে বিশেষভাবে এই কারণে। 


    রাজ্য সরকারের খাদ্যসামগ্রী সংক্রান্ত টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে তাই বলছেন, চালের দাম কেন বাড়ছে? কেন্দ্রীয় সরকারই তার জবাব দিতে পারে।


    বিদেশে বেশি পরিমাণে চাল রপ্তানির ফলে ধানের দাম বেড়েছে। মানছেন রাজ্যের রাইস মিল মালিক সংগঠনের সভাপতি আব্দুল মালেক। তিনি জানান, সরু চাল তৈরির ধানের দাম কয়েকমাস আগেও ছিল প্রতি কুইন্টাল ২২০০ টাকা। তা এখন বেড়ে হয়েছে ২৮০০-৩০০০ টাকা। সরু চালের দামবৃদ্ধির আরও একাধিক কারণ রয়েছে বলে তিনি মনে করেন। 


    আব্দুল মালেক আরও জানান, বাঁশকাঠি, মিনিকিট প্রভৃতি চাল তৈরি হয় বোরো মরশুমের ধান থেকে। ওই ধান ওঠে এপ্রিল-মে নাগাদ। গত বোরো মরশুমে যে ধান উঠেছিল তার মজুত শেষের মুখে। নতুন বোরো ধান ওঠার পরই সরু চালের দাম কিছুটা কমবে বলে আশা করা যায়। খরিফ মরশুমের চাষের দরুন শীতকালে যে নতুন স্বর্ণ, রত্না প্রভৃতি প্রজাতির ধান উঠেছে, তা থেকে তৈরি হয় মোটা চাল। বিদেশে বিশেষ করে বাংলাদেশে স্বর্ণ ধানের চাল যাচ্ছে। তাই খোলাবাজারে প্রতি কুইন্টাল স্বর্ণ ধানের দর এখন ২২০০ টাকার মতো, যা গতবছরের এইসময়ের তুলনায় বেশিই।


    পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে আগে মজুত করা ধান ও চাল বেচে কিছু রাইস মিল মালিক ও ব্যবসায়ীরা এখন লাভ করছেন। এমন অভিযোগও উঠছে। তবে ব্যবসায়ী এবং মিল মালিকদের দাবি, চাষিরা তাঁদের কাছে মজুত ধান বেচে এখন বাড়তি দাম পাচ্ছেন। বেশি দামে ধান কেনার ফলেই বাড়ছে চালের দাম। তবে সরকারি মহলের একাংশের বক্তব্য, রাজ্যের প্রায় ৯ কোটি রেশন গ্রাহককে বিনামূল্যে চাল দেওয়া হয়। ফলে সাধারণ চাল খেতে অভ্যস্ত পরিবারগুলির বিশেষ সমস্যা হচ্ছে না। তবে বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, অনেক গ্রাহক রেশনের চাল বেচে দিয়ে সেই টাকায় খোলাবাজার থেকে সরু চাল কিনে খাচ্ছেন। রেশন চালু থাকা সত্ত্বেও সরু চালের চাহিদা বেড়েছে এই কার঩ণেও।
  • Link to this news (বর্তমান)