• গ্রাম বাংলার মানুষকে পানীয় জল দিতে বাজেটে রেকর্ড বরাদ্দ মমতার
    বর্তমান | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • প্রীতেশ বসু, কলকাতা: বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের সংযোগ প্রদান প্রকল্পের কাজের মেয়াদ ২০২৮ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে। কেন্দ্রীয় বাজেটে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ইতিমধ্যে রাজ্যের ৯৫ লক্ষ বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ দিয়েছে রাজ্য। ফলে কেন্দ্রের দেওয়া সময়সীমার অনেক আগেই বাংলার ১ কোটি ৭৫ লক্ষ বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়ার কাজ শেষ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছে রাজ্যের প্রশাসনিক মহল। আগামী একবছরের মধ্যেই এই প্রকল্পের অধিকাংশ কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। আর সেই লক্ষ্য পূরণ করতেই ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের (পিএইচই) বাজেট বরাদ্দ এক ধাক্কায় ১১ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে রাজ্য বাজেটে। অঙ্কটি গতবছরের চেয়ে ৭ হাজার কোটি টাকা বেশি। উল্লেখ্য, পিএইচই ‘জলস্বপ্ন’ প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্বে রয়েছে। 


    এই প্রকল্পে পরিকাঠামো উন্নয়ন বা বাড়ি বাড়ি সংযোগ দেওয়ার কাজের অর্ধেক খরচ বহন করে কেন্দ্র। জলের পাইপ নিয়ে যাওয়ার বাকি খরচ, প্রয়োজনীয় জমির দাম মেটানো থেকে শুরু করে রক্ষণাবেক্ষণ পর্যন্ত বিপুল অর্থ রাজ্যকেই বহন করতে হয়। তা সত্ত্বেও  গত পাঁচমাস কোনও রাজ্যকেই নিজের অংশের একটি টাকাও দেয়নি মোদি সরকার। তবে গ্রাম বাংলার মানুষকে নিরবচ্ছিন্ন পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ সুনিশ্চিত করতে রাজ্য বাজেটে ইতিবাচক পদক্ষেপই নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সূত্রের খবর, মোট বরাদ্দের বেশিরভাগই ‘মূলধনী ব্যয়’ বা পরিকাঠামো উন্নয়ন খাতে ব্যয়ের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের আগেই যে নবান্ন রাজ্যের অধিকাংশ বাড়িতে জলের সংযোগ পৌঁছে দিতে চাইছে, রাজ্যের এই ভূমিকায় স্পষ্ট হয়েছে সেই বার্তাও। মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।


    কেন্দ্র বাংলাকে ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে ১০১০ কোটি টাকা পাঠিয়েছিল। তারপর থেকে এই প্রকল্পে আর একটি টাকাও পাঠায়নি নয়াদিল্লি। রাজ্য অর্থদপ্তরের হিসেব অনুযায়ী, চলতি অর্থবর্ষে এই প্রকল্পে কেন্দ্র এবং রাজ্য মিলিয়ে সর্বমোট প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হওয়ার কথা। আগস্টের বরাদ্দ মিলিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে এখনও পর্যন্ত  ২,৫২৫ কোটি টাকা কেন্দ্র দিয়েছে। হিসেব কষে, একইসঙ্গে তার সমান্তরাল টাকা ছেড়েছে রাজ্য অর্থদপ্তরও। এছাড়া ২৬ সেপ্টেম্বর আরও ১,২৩৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য। কেন্দ্রীয় বাজেটে এই প্রকল্পের সময়সীমা আরও চারবছর বাড়ানো হলেও অর্থবরাদ্দ সংক্রান্ত বার্তা রাজ্যের কাছে এখনো পৌঁছয়নি।


    কেন্দ্রীয় বরাদ্দ নিয়ে আরও একটি আশঙ্কার কারণ আছে রাজ্যের। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে এই প্রকল্পের জন্য ৭০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ধরা হয়।  সংশোধিত বাজেটে তা নেমে এসেছে মাত্র ২২,৬৯৪ কোটি টাকায়! এই অর্থবর্ষেও কেন্দ্রের অনুরূপ পরিকল্পনা থাকলে ২০২৫-২৬ সালের বাজেট প্রস্তাবের ৬৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ নিয়ে সংশয় বাড়বে। সেক্ষেত্রে কি বাংলার বাড়ি, ১০০ দিনের কাজের মতো সম্পূর্ণ ব্যয়ভার রাজ্যকেই নিতে হবে? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে বিভিন্ন মহলে। 
  • Link to this news (বর্তমান)