৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ডেওচা-পাঁচামির চাঁদা মৌজায় খনন কার্যের সূচনা হয়। শুরুতে ৩২৬ একর জমিতে ব্যাসল্ট তোলার কাজ আরম্ভ হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই খনন স্থলে নিয়মিত থাকছেন সরকারি কর্মী থেকে শুরু করে পুলিশ কর্মীরা। জমজমাট হয়ে উঠেছে গোটা এলাকা। কয়েকদিনেই গড়ে উঠেছে একাধিক অস্থায়ী দোকান। আয়ের সুযোগ পেয়ে খুশি গ্রামবাসীরাও। অন্যদিকে, পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে শুরু হয়েছে ওই এলাকার গাছ প্রতিস্থাপনের কাজও।
চাঁদা মৌজায় প্রথম পর্যায়ের খনন স্থলে বসেছে বেশ কিছু দোকানপাট। পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লা খনির খননের কাজ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে অস্থায়ী ভাবে করা হয়েছে বিভিন্ন দোকান। চা, বিস্কুট, চপ, মুড়ি, ঘুগনির দোকান সাজিয়ে বসেছেন গ্রামবাসীরা। দোকানদার ছোটন বাউরি বলেন, ‘শয়ে শয়ে মানুষ আসছেন দিবারাত্রি। থাকছেন প্রচুর পুলিশ কর্মীরাও। তাঁরা এসে খাচ্ছেন আমাদের দোকানগুলিতে। কোনও কোনও সময় এতটাই ভিড় থাকছে, ক্রেতাদের খাবার দিতে কার্যত হিমশিম খেতে হচ্ছে। ২৪ ঘন্টাই খোলা রাখতে হচ্ছে দোকান।’
গ্রামবাসীদের একাংশকে চাষবাসের উপর নির্ভর থাকতে হয়। অনেকেই শহরে বা ভিন জেলায় গিয়েও কাজ করেন। নতুন রোজগারের পথ খুলে যাওয়ায় খুশি অনেকেই। এক দোকানদার বলেন, ‘এখানে দোকান করে ভালো আয় হচ্ছে। সারাদিনে প্রায় তিন থেকে চার হাজার টাকা উপার্জন হয়। আশা করছি আগামী দিনেও ভালো উপার্জন হবে।’
অন্যদিকে, শুক্রবার থেকেই ডেওচা-পাঁচামি এলাকায় শুরু হয়েছে গাছ প্রতিস্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। শিল্প গড়ার ক্ষেত্রে যে প্রকৃতির কথাও মাথায় রাখা হচ্ছে, সেই বার্তা প্রথম থেকেই দিতে চেয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক বিধান রায় জানান, প্রথম ধাপের কয়লা খনির প্রকল্পের জন্য ৯৮০টি গাছের মধ্যে ১৮০টি গাছকে প্রতিস্থাপন করা হবে। দেশের স্বনামধন্য বিশেষজ্ঞদের হাত ধরেই এই গাছ প্রতিস্থাপন হবে। বীরভূমের মহম্মদবাজারের চাঁদা মৌজার অন্তর্গত মথুরা পাহাড়িতে শুরু হয়েছে গাছ প্রতিস্থাপন করার কাজ।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে , ৩২৬ একর জমির এই এলাকায় রয়েছে মোট ৯৮০ টি গাছ, যার মধ্যে মহুয়া গাছ রয়েছে ৮২০ টি। বাকি ১৬০টি শাল এবং অর্জুন গাছ। গাছগুলিকে প্রকল্প এলাকার বাইরে চাঁদা মৌজার মধ্যেই স্থানান্তর করা হবে। এই গাছ স্থানান্তর করার বরাত দেওয়া হয়েছে খড়গপুর আইআইটির একটি সংস্থাকে। অন্যদিকে গাছগুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পরিচর্যা করবেন আন্তর্জাতিক হর্টিকালচার সোসাইটির চেয়ারম্যান এস কে মিত্র। বিশেষজ্ঞ রামচন্দ্র আপারির নজরদারিতেই এই গাছ স্থানান্তর করার কাজ চলবে।